জেএসসি ও জেডিসিতে নম্বর কমাতে একমত শিক্ষা মন্ত্রণালয়

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

পরীক্ষার্থীদের চাপ কমাতে চলতি বছরের জেএসসি (জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট) ও জেডিসি (জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট) পরীক্ষায় নম্বর ও বিষয় কমানোর প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে ১১টি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা জেএসসি ও জেডিসিতে ২০০ নম্বর কমানোর প্রস্তাব করেন। এ নিয়ে রোববার মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইনের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সভায় নম্বর কমানোর বিষয়ে সহমত জানানো হয়। আগামী ২৭ মে জাতীয় শিক্ষাক্রম সমন্বয় কমিটির (এনসিসিসি) সভায় এ সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।

সংশ্নিষ্টরা জানান, আগামী ১ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া ২০১৮ সালের জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা থেকেই নম্বর কমানোর সিদ্ধান্ত কার্যকর হতে পারে। অষ্টম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় মোট ১০টি বিষয়ে ৮৫০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়। নতুন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হলে চলতি বছর থেকে জেএসসি ও জেডিসিতে ৭টি বিষয়ে ৬৫০ নম্বরের পরীক্ষা হবে।

সূত্র জানায়, রোববারের সভায় ‘এমসিকিউ’ (নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন) পদ্ধতি নিয়েও আলোচনা হয়। তবে চলতি বছরের জেএসসি ও জেডিসিতে এমসিকিউ বহাল রাখার ব্যাপার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস ও পরীক্ষার হলে অনিয়ম ঠেকাতে বিভিন্ন মহলের পরামর্শে পাবলিক পরীক্ষা থেকে এমসিকিউ প্রত্যাহারের ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কিন্তু এরই মধ্যে শিক্ষাবর্ষের অর্ধেক সময় পেরিয়ে যাওয়ায় চলতি বছরের পরীক্ষায় বড় পরিবর্তন না এনে এমসিকিউ পদ্ধতি বহাল রাখা হচ্ছে।

এর আগে শিক্ষা বোর্ডগুলোর চেয়ারম্যান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকদের সমন্বয়ে গঠিত ‘আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ কমিটি’ জেএসসি ও জেডিসি থেকে ২০০ নম্বরের পরীক্ষা কমানোর প্রস্তাব করে। গত ৮ মার্চ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির সভায় বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষায় নম্বর ১৫০ থেকে কমিয়ে ১০০ করার এবং ঐচ্ছিক বিষয়ে (গার্হস্থ্য অর্থনীতি/কৃষিশিক্ষা) পরীক্ষা না নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ধারাবাহিক মূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রোববারের সভায় এ প্রস্তাবে সহমত জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সভায় অংশ নেওয়া একজন অতিরিক্ত সচিব জানান, নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী জেএসসিতে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয়পত্র মিলে ১০০ নম্বরের একটি পরীক্ষা হবে। ইংরেজিতেও দুই পত্র মিলে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। গণিত, ধর্ম, বিজ্ঞান, বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের পরীক্ষা আগের মতো আগের নম্বরে অনুষ্ঠিত হবে। চতুর্থ বিষয়ের মূল্যায়ন হবে শ্রেণিকক্ষে।

তবে কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া বলেন, নম্বর কমিয়ে শিক্ষার্থীদের চাপ কমানো যাবে না। কারণ বোর্ডে পরীক্ষা না হলেও শিক্ষার্থীদের সবগুলো বিষয় পড়তে হবে। স্কুলে পরীক্ষাও দিতে হবে। বাংলা-ইংরেজিতে নম্বর কমানো হলেও পুরো বই পড়তে হবে। তাই নম্বর কমানোর কোনো যুক্তি নেই।