জুনায়েদকে ফিরিয়ে দেয়ার সময় ওসি কাঁদলেন

:
: ৫ years ago

পাবনায় ওসির মানবিকতায় হারিয়ে যাওয়া শিশু জুনায়েদ ফিরে পেল তার স্বজনদের। এক সপ্তাহ পিতৃস্নেহে কাছে রাখার পর রোববার দুপুরে পাবনা থেকে জুনায়েদকে অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায় দেয়া হয়।

পাবনা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে এক সপ্তাহ আগে কুড়িয়ে পাওয়া শিশু জুনায়েদকে পরম মমতায় কাছে নিয়ে রাখেন পাবনা সদর থানা পুলিশের ওসি ওবাইদুল হক। তার জন্য করেছেন ঈদ বাজার। গত এক সপ্তাহ বেশ হাসি-খুশিতেই কেটেছে শিশু জুনায়েদের (৭)। কিন্তু ফেসবুকের সৌজন্যে অবশেষে সন্ধানও মিলেছে তার বাবা-মার।

দুপুরে জুনায়েদ ওসিসহ অন্য পুলিশ সদস্যদের কাঁদিয়ে তার স্বজনের কাছে ফিরে যায়। ওসি ওবাইদুল হক জানান, সপ্তাহ খানেক আগে এক রাতে টহলরত অবস্থায় তিনিসহ অন্যরা বাস টার্মিনালে ভবঘুরে শিশু জুনায়েদকে কুড়িয়ে পান। সে শুধু তার নাম বলতে পারছিল। আর কোনো ঠিকানাই বলতে পারছিল না। এমনকি বাবা-মায়ের নামও না।

হৃদয় ছুঁয়ে যায় ওসি ওবাইদুলের। তিনি শিশুটিকে নিয়ে রাখেন পাবনা সদর থানার হেফাজতে। ওসির সঙ্গে বেশ খাতির জমে ওঠে জুনায়েদের। ঈদ সামনে আসায় তার জন্য জামা-জুতা, খেলনা সব কিনে দেয়া হয়। এমনকি তার পছন্দমতো খাবারও বিভিন্ন সময় কিনে খাওয়ানো হয়। তাকে হাসি খুশি রাখতে ওসিসহ অন্যরা চেষ্টা করেন। ওসি তার সঙ্গে বিভিন্ন সময় সেলফিও তোলেন। সেটি ফেসবুকে আপলোড করেন। এতেই বাজিমাত। তার পরিচয় পাওয়া যায়। ছবি দেখে তার স্বজনরা তাকে শনাক্ত করেন।

ওসি বলেন, ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানায় প্রথম যোগাযোগ করেন তার স্বজনরা। তাদের মাধ্যমে শিশুটির স্বজনরা শনিবার (১ জুন) রাতে কথা বলেন তার সঙ্গে। তিনি শিশুটির স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, জুনায়েদের বাবা সুমন মিয়া (৪০) শ্রমিক। তার স্ত্রী (জুনায়েদের মা) কয়েক বছর হলো দেশের বাইরে কাজে গেছেন। বাবা মো. সুমন মিয়া কিছুটা হাবাগোবা টাইপের। এতে শিশুটি বাড়ি থেকে সবার অজান্তে হারিয়ে যায়। তিন মাস ধরে সে নিখোঁজ ছিল। দেশের বিভিন্ন জায়গায় কেটেছে তার ভবঘুরে জীবন।

তিনি বলেন, এখন তার স্বজনদের খোঁজ মেলায় আমি আনন্দিত। তার প্রতি একটা মায়ার বাঁধনও জন্ম নিয়েছে এরই মধ্যে । এজন্য তাকে ছাড়তে কষ্টও হচ্ছে। তবে সান্ত্বনা পাচ্ছি শিশুটি তার স্বজনদের কোলে ফিরে যেতে পারছে। সে ভালো থাকলেই ভালো লাগবে আমার।