#

জীবনের অর্ধেকটা সময় মঞ্চ, টেলিভিশন আর চলচ্চিত্র অঙ্গনে কাটিয়েছেন মায়া ঘোষ (৭০)। তিনি আনন্দ বেদনার দুর্দান্ত অভিনয়ে দর্শকদের বিনোদন দিয়েছেন। তার বেদনাবিধুর দৃশ্যের অভিনয়ে দর্শকরা আটকে রাখতে পারেনি চোখের পানি। সেই মায়া ঘোষের জীবনে এখন শুধুই অশ্রু-বেদনা। ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তিনি।

মায়া ঘোষ প্রায় দুই শতাধিক সিনেমা ও নাটকে অভিনয় করেছেন। মঞ্চ নাটক, টিভি ও চলচ্চিত্র অঙ্গনে ছিল সরব উপস্থিতি। সেই মানুষটি এখন হাসপাতালের শয্যায় দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছেন। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে এই মানুষটির চিকিৎসা ব্যয় নিয়ে বিপাকে পড়েছে পরিবার। ব্যয়বহুল চিকিৎসায় হিমশিম খাচ্ছেন স্বজনরা। তবুও হাল ছাড়েননি তারা। যশোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এখন চিকিৎসাধীন মায়া ঘোষ।

মায়া ঘোষের দুই ছেলে দীপক ঘোষ ও প্রদ্যুত ঘোষ জানান, মায়ের অবস্থা খুব একটা ভালো না। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

 

বড় ছেলে দীপক ঘোষ বলেন, মায়ের চিকিৎসায় প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে। মায়ের কাছেই আছি দুই ভাই। তেমন কাজ করতে পারছি না। আবার খরচ করতে গিয়েও হিমশিম খাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, মা দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। কয়েক দফায় সহযোগিতা পেয়েছি। মায়ের অবস্থা ভালো না। শেষ চেষ্টা করে যাচ্ছি। মায়ের চিকিৎসা ব্যয় বহন করতে আমরা ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।

স্বজনরা জানান, ১৯৪৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর যশোরের মণিরামপুর উপজেলার প্রতাপকাটি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন মায়া ঘোষ। তার বাবার নাম শংকর প্রসাদ গাঙ্গুলি। পরবর্তীতে একই উপজেলার মাছনা-খানপুর গ্রামের দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৯৮৪ সালে তারা ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। এর আগে ১৯৮১ সালে ‘পাতাল বিজয়’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালে এটিএন বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ডিবি’-তে অভিনয় করেছেন।

 

২০০০ সালে মায়া ঘোষের শরীরে ক্যানসার ধরে পড়ে। ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কলকাতার সরোজ গুপ্ত ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয়। ধারাবাহিকভাবে চলে চিকিৎসা। ২০০৯ সালের দিকে অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠেন। এরপর কিডনি, লিভার ও হাটুর সমস্যা দেখা দেয়। তার চিকিৎসা চলছিল।

২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে আবারও ক্যানসার ধরা পড়ে। পুনরায় কলকাতার সরোজগুপ্ত ক্যানসার হসপিটালে নেয়া হয় চলতি বছরের জানুয়ারিতে। সেখান থেকে ফিরে পুনরায় মার্চে যাওয়ার কথা বলা হয়। ১৩ মার্চ শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। এরপর ২২ মার্চ কলকাতায় নেয়া হয়। শারীরিক অবস্থার খুব বেশি উন্নতি হয়নি। মায়া ঘোষও দেশে ফেরার জন্য ব্যাকুল ছিলেন। একপর্যায়ে গত ১৫ এপ্রিল তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে যশোর কুইন্স হসপিটালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন মায়া ঘোষ।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন