জীবনানন্দের শহরের অপরূপ শ্বেতপদ্ম (ভিডিও)

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

মেহেদী হাসান , বরিশালঃ ধান, নদী, খালের অপরূপ সৌন্দর্যে পূর্ণ বরিশাল। ছল ছল শব্দে নদীর বয়ে চলা, চোখ জুড়ানো ধানের ক্ষেতে প্রজাপতির লুকোচুড়ি খেলা, মৃদু বাতাসে দু’একটা শিরীষ পাতা বা হিজলের লালচে ফুলের পানিতে ঢলে পড়া আবার গাঙ ফড়িং এর চঞ্চল উড়াউড়ি, তার ভেতরে পদ্মপাতায় সাপ আর ভ্রমরের খেলা কি নেই এই বরিশালে। যেখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য কড়া নাড়ে সব বাঙালির হৃদয়ে।

বরিশালের এমনই একটি স্থান হলো শ্বেত পদ্ম দীঘি। নগরবাসীর কাছে এটি শ্বেতপদ্ম পুকুর নামে পরিচিত।

লাল রঙের শাপলা, পদ্মের দীঘি চোখে পড়লেও আমাদের দেশে শ্বেত পদ্মদীঘি মোটামুটি বিরলই বলা যায়।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ এর নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরের পাশে হিমনীড়, ছায়ানীড়, শিলানীড় ও চানবাংলোর সামনে এই পুকুরে আবার ফুটেছে শ্বেত পদ্মফুল।

শুধু সৌন্দর্যের প্রতীক নয় এই পদ্ম, বাংলার বাঘা বাঘা কবিদের কবিতায়ও স্থান পেয়েছে এই পদ্ম।

জানা যায়, ব্রিটিশ শাসনামলে ইন্ডিয়ান জেনারেল নেভিগেশন (আইজিএন) এবং রিভার স্টিম নেভিগেশন (আরএসএম-এর স্টিমার কোম্পানির কার্যালয় বরিশাল নগরীর রাজা বাহাদুর সড়কে বেলস পার্ক এর উওর প্রান্তে প্রায় সাড়ে পাঁচ একর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং সেখানে কোম্পানির কর্মকর্তাদের বিশ্রামের জন্য হিমনীড় বাড়িটি তৈরি করা হয়।

১৯৬৫ সালে মেরিন ওয়ার্কশপের তৎকালীন ম্যানেজার জার্মান নাগরিক ইলিগনর বিশেষ ব্যবস্থায় মাটির পাত্রে কিছু শ্বেতপদ্মগাছ সংগহ করে পুকুরের তলদেশে রোপণ করেন। এরপর পুরো পুকুর সাদা পদ্মে ছেয়ে যায়।

১৯৪২ সালের দিকে নির্মিত হিমনীড় ও পশ্চিম পাশের চাঁনবাংলোয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী বিআইডব্লিউটিএ এর কার্যক্রম শুরু হয় নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তর হিসেবে। ঐতিহ্যবাহী চাঁনবাংলোককে বানানো হয় ভিভিআইপির বিশ্রামাগার এবং কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বসবাসের জন্য দেওয়া শিলানীড় ও ছায়ানীড়কে।

তবে বেশকিছুদিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে নানা অব্যবস্থাপনা ও অযত্নে বাড়িটির এবং এর আশেপাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও প্রায় নষ্ট হয়ে যায়। শ্বেত পদ্মগাছগুলোও প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। এরই মধ্যে দুই বছর আগে পুকুরে পদ্মগাছগুলো আবার নতুন করে পাতা ছড়ায়, তবে সে বছর কোনো ফুল ফোটেনি।

এরপরের বছর থেকে পুকুরে আলো ছড়িয়ে ফুটছে পদ্ম।