সীমান্তের জিরো পয়েন্টে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরে স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের পশ্চিম কুল এলাকার জিরো লাইনে বসবাসকারী ৫২ পরিবারে ২২১ জন রোহিঙ্গাকে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে নিয়ে আসা হয়।
পরে কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া এসব রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। এ সময় ত্রাণমন্ত্রীর সাথে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, ত্রাণ কাজে নিয়োজিত সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. রহমান, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বনিক, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের কমিশনার আবুল কালামসহ সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসন জিরো লাইনে অবস্থানকারী এসব রোহিঙ্গাদের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের কাছে হস্তান্তর করে। পরে কয়েকটি বাসে করে তুমব্রু সীমান্তের জিরো লাইন থেকে তাদের উখিয়ায় স্থানান্তর করা হয়। পর্যায়ক্রমে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের জিরো লাইনে বসবাসকারী আরো ১৭ হাজার পরিবারকে উখিয়ায় শরণার্থী শিবিরগুলোতে নিয়ে আসা হবে বলে প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
গত ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইনে ব্যাপক সহিংসতার পর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু আশারতলি ও চাকঢালা সীমান্তের জিরো লাইনে মোট ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান নেয়। এসব রোহিঙ্গাদের এখন সরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ত্রাণ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশে অবস্থানকারী রোহিঙ্গাদের জন্য উখিয়ায় আরো নতুন করে এক হাজার একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৩ হাজার একর জমি রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। ত্রাণ বিতরণ ও নিয়ন্ত্রণের সুবিধার জন্য কক্সবাজার ও বান্দরবানের মোট ২৩টি আশ্রয় শিবিরের সব রোহিঙ্গাদের উখিয়ার শরণার্থী শিবিরে নিয়ে আসা হবে। সব রোহিঙ্গাদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হবে। শরণার্থী শিবিরের বাইরে কোনো রোহিঙ্গা থাকার সুযোগ পাবে না।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক জানান, পর্যায়ক্রমে বান্দরবানের সব রোহিঙ্গাদের উখিয়ার শরণার্থী শিবিরগুলোতে নিয়ে যাওয়া হবে। শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন এ বিষয়ে কাজ করছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের অতিরিক্ত কমিশনার শামসুদ্দোজা জানান, কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য তাঁবু, পানির ব্যবস্থা, পায়খানা ঘরসহ সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রথম দফায় নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে ৫২ পরিবারকে উখিয়ায় নেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য সবাইকে নেওয়া হবে।