জাহিদুল হাসান:: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অন্যের হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমান শাকিল নামে এক শিক্ষার্থীকে আটক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (১৯ জুন) জাবির ‘বি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষা চলাকালীন বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ কেন্দ্রের ২৪ নং কক্ষ থেকে তাকে আটক করা হয়।আটককৃত শিক্ষার্থী শাকিলের বাড়ি ময়মনসিংহে। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী বলে দাবি করেছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, মুহীন তাশদীদ মাহি নামে এক ভর্তিচ্ছুর হয়ে প্রক্সি দিতে আসেন শাকিল। এর আগে রবিবার তিনি ‘সি’ ইউনিট ও ‘সি১’ ইউনিটেরও ভর্তি পরীক্ষা দেন। সোমবার ‘বি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ২৪ নং কক্ষে পরীক্ষায় বসেন তিনি। এ সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের সন্দেহ হলে পরীক্ষার্থীর পিতার, নাম জন্মতারিখ জানতে চায়। পরে রেজিষ্ট্রেশন কার্ডের সাথে পরিচয়ের গড়মিল পাওয়ায় দায়িত্বরত শিক্ষক ঐ ব্যাক্তিকে প্রক্টর অফিসে পাঠান।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী শাকিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী বলে নিশ্চিত করেছেন তার সহপাঠীরা। তার এই কান্ডে হতবাক সবাই। শাকিলের বিভাগের একই ব্যাচের এক শিক্ষার্থী জানান, শাকিল নিয়মিত ক্লাস করলেও সবার সাথে মিশতো না। একটা গন্ডির মধ্যেই তার চলাফেরা ছিল।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. সানজিদা ফারহানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,আমি এ বিষয়ে এখনো জানিনা। আপনার কাছেই এ বিষয়ে প্রথম শুনলাম। সে যদি এধরনের ঘটনা ঘটিয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযুক্ত শাকিল জাবির প্রক্টরিয়াল বডির প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রক্সি দেওয়ার তথ্য স্বীকার করেন। জামালপুরের হাসানুজ্জামানের সঙ্গে ৪০ হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তি হয়। মোট ৪টি ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে যেকোনো একটিতে সুযোগ পেলেই টাকা দেওয়ার কথা ছিল। এর আগে ‘সি’ ইউনিট ও ‘সি১’ ইউনিটের পরীক্ষায় পক্সি দেয় শাকিল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান জানান, ‘বি’ ইউনিটের তৃতীয় শিফটের পরীক্ষার সময় দায়িত্বরত শিক্ষকরা তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি পরীক্ষায় জালিয়াতির কথা স্বীকার করেন। তিনি এখন আমাদের হেফাজতে আছেন। ইতিমধ্যে ‘সি’ ও ‘সি১’ ইউনিটে দেওয়া শাকিলের পরীক্ষার উত্তরপত্র ইতিমধ্যে বাতিল করতে বলা হয়েছে।