জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালা অনুমোদন মন্ত্রিসভায়

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালা-২০১৮’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এটি অনুমোদন দেওয়া হয়।

এ ছাড়াও মন্তিসভায় ‘সার (ব্যবস্থাপনা) (সংশোধন) আইন ২০১৮’ খসড়া, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৮’-এর খসড়া, ‘বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট আইন, ২০১৮’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন হয়।

পরে সচিবালয়ে বিকেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতিমালা তৈরি করেছে। এটি বিস্তৃত নীতিমালা। এটি বাংলা ও ইংরেজি ভার্সনে করা হয়েছে। ১৯৭৪ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান নীতিমালা করেছিলেন। সেটার ওপর ভিত্তি করে নতুন নীতিমালাটি বিস্তৃত করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নীতিমালায় প্রতিরক্ষা পরিকল্পনায় সরকারের সাধারণ রূপরেখার বর্ণণা রয়েছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে— জাতীয় অগ্রগণ্যতা, আইনি কাঠামো ও সম্পদের ভিত্তিতে সশস্ত্র বাহিনীর যথাযথ ভূমিকায় জনমতের প্রতিফলন ঘটানো। এটি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের প্রতিরক্ষা পরিবেশ সম্পর্কে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করবে। সার্বিক পরিসরে প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগের চলমান ও পরিকল্পিত সক্ষমতা এবং ভূমিকা সম্পর্কে ধারণা দেবে।

নীতিমালায় মুখ্য জাতীয় মূল্যবোধসমূহ, জাতীয় লক্ষ্য ও প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্য, জাতীয় স্বার্থ, বাংলাদশের প্রতিরক্ষার মৌলিক বিষয় আনা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর মূল সক্ষমতা কী হবে, যুদ্ধকালীন সশস্ত্র বাহিনী কীভাবে মোতায়েন হবে তা উল্লেখ রয়েছে। সামরিক-অসামরিক, সশস্ত্র বাহিনী-সাধারণ নাগরিক ও গণমাধ্যমের সাথে সম্পর্ক কী হবে সেটাও বিস্তারিত রয়েছে বলে জানান শফিউল আলম।

তিনি বলেন, নিরাপত্তাবিষয়ক জাতীয় কমিটি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর নেতৃত্বে পরিচালিত হবে প্রতিরক্ষা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। সংসদ আগের মতোই প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করবে। যুদ্ধকালীন আধা সামরিক ও সহায়ক বাহিনী সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ডে থাকবে। বিজিবি, কোস্টগার্ড, বিএনসিসি, পুলিশ বাহিনী, আনসার, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী অন্যান্য প্রতিরক্ষা দল ক্রান্তিকালীন সেনাবাহিনীর সঙ্গে কাজ করবে।

নীতিমালার উপসংহারে বলা হয়েছে, রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সকলকে ‘ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোল’ এই আহ্বান জানিয়ে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধ চলাকালীন বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠে। জনগণের সঙ্গে এক হয়ে স্বাধীনতা অর্জনে অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে এই বাহিনী।

ভেজাল সার বিক্রিতে জেল জরিমানা বাড়ছে: কেউ ভেজাল সার বিক্রি করলে ২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড তাকে ভোগ করতে হবে। এমন বিধান রেখে মন্ত্রিসভায় নতুন ‘সার (ব্যবস্থাপনা) (সংশোধন) আইন ২০১৮’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন হয়েছে।

২০০৬ সালের বিদ্যমান আইনের সংজ্ঞায় ‘আবশ্যকীয় উদ্ভিদ উপাদান’, সংযুক্ত করে পুষ্টির বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সংজ্ঞার ২-এর ২০ অনুচ্ছেদে মিশ্রণ সারের পরিবের্ত ‘সুষম সার’ করা হয়েছে। জাতীয় সার প্রমিতকরণ কমিটিকে ১৫ সদস্য থেকে ১৭ সদস্য করা হয়েছে।

বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ আইন: ১৯৯২ সাল থেকে এই প্রতিষ্ঠানটি একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে চলছে। এতদিন এটির আইন ছিল না। এখন আইনে পরিণত করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সব জেলাকে নিয়ে বরেন্দ্র এলাকা। বৃহত্তর রাজশাহী বিভাগ নিয়ে এই বরেন্দ্র এলাকা গঠিত হবে। আইনের উদ্দেশ্য সফল করতে সরকার গেজেট জারি করে যে কোনো এলাকাকে বরেন্দ্র এলাকা হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে।

বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ও প্রিয়ভাষিনীর মৃত্যুতে মন্ত্রিসভায় শোক: মন্ত্রিসভায় বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ফেরদৌসি প্রিয়ভাষিনীর মৃত্যুতে এবং কাঠমান্ডুতে সাম্প্রতিক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ ও নিহতদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়।