সালমান রহমান, কূটনৈতিক প্রতিবেদক:: আজ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে ইউনেস্কো’র ‘ বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি , জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চের ভাষণের দিনটিকে যথাযােগ্য মর্যাদায় উদযাপন করা হয় । জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটির সূচনা করা হয় । এরপর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন এবং বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামরা করে বিশেষ মােনাজাত করা হয় । এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ এবং ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষন এবং একটি প্রামাণ্য ভিডিও প্রদর্শন করা হয় অনুষ্ঠানটিতে । আলােচনা পর্বে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ।
১৯৭১ সালে জাতির পিতা প্রদত্ত ৭ ই মার্চের ভাষণ একটি জাতিকে কীভাবে বজ্রকঠিন ঐক্যের পতাকাতলে সমবেত করে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত প্রস্তুতি গ্রহণে উজ্জীবিত করেছিল তা উঠে আসে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে । তিনি বলেন , “ এটি কোনাে পূর্বলিখিত ভাষণ ছিল না । এটি ছিল ঐ সময়ের প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর হৃদয় উৎসারিত তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া । এতে একদিকে রয়েছে আমাদের সূদীর্ঘ মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাস , আর অন্যদিকে রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ” । তিনি আরও বলেন , ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের সফল পরিণতি হচ্ছে স্বাধীন স্বার্বভৌম বাংলাদেশ । ৭ ই মার্চের ভাষণ যাতে সর্বদা দীপ্যমান থাকে এবং জাতির পিতার সম্মােহনী দরাজ কণ্ঠ যাতে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে অনুরণিত হয় সেজন্য নতুন প্রজন্মকে ভাষণটি বার বার শােনানাের আহ্বান জানান । দূত ফাতিমা । জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নানা কর্মসূচির আয়ােজন করে যাচ্ছে মর্মে উল্লেখ করেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা । প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন , গত ২৬ ফেব্রুয়ারি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে বাংলাদেশ জাতিসংঘের চুড়ান্ত সুপারিশ অর্জন করেছে । স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন । স্ব স্ব অবস্থান থেকে সকল প্রবাসী বাংলাদেশীদেরকে তিনি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান । অন্যান্য আলােচকগণ ভাষণের প্রেক্ষাপট , বিষয়বস্তু , সুদূর প্রসারী প্রভাবের উপর আলােকপাত করেন । জাতির পিতার এই ভাষণে স্বাধীনতা অর্জনের জন্য একজন সুযােগ্য রাষ্ট্রনায়কের সুচিন্তিত কৌশলের সবটুকুই প্রতিভাত হয়েছে মর্মে মন্তব্য করেন বক্তাগণ । উল্লেখ্য , ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর ইউনেস্কো , ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ রমনার রেসকোর্স ময়দানে জাতির পিতার দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণকে বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মেমােরি অব দ্যা ওয়ার্ল্ড রেজিস্টার ‘ – এ অন্তর্ভুক্ত করে । ***