জর্ডানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন

:
: ৩ years ago

সালমান রহমান, কূটনৈতিক প্রতিবেদক:: জর্ডানস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর ১০১তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস ২০২১ পালন করেছে।  দিবসের প্রত্যূষে এই দিবস উপলক্ষ্যে মান্যবর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এসময় মান্যবর রাষ্ট্রদূতের সাথে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং জর্ডানে বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বঙ্গবন্ধুর স্মরনে দাড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। আলোচনা অনুষ্ঠানের শুরুতে দূতাবাস কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর উপর আলোকচিত্র প্রদর্শন করে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি যাপন করা হয়। এরপর পবিত্র কোরান থেকে তেলোয়াত ও বঙ্গবন্ধুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।  দিবসটি উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মাননীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত  বাণী পাঠ করা হয় । জর্ডানে কোভিড জনিত বাধ্যবাধকতার কারনে সংক্ষিপ্ত পরিসরে আয়োজিত আলোচনা অনুষ্ঠানে মান্যবর রাষ্ট্রদূত ও প্রবাসী বাংলাদেশী প্রতিনিধিবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
মান্যবর রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, ১৭ই মার্চ বাংলাদেশীদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনে জন্ম নিয়েছিলেন বাঙ্গালির মুক্তির মহা নায়ক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।  ।  যে কোন পরাধীন জাতি ততক্ষণ পর্যন্ত স্বাধীনতার আস্বাদ গ্রহণ করতে পারে না যতক্ষণ না একজন বিচক্ষণ ও সাহসী রাষ্ট্রনায়ক এবং নেতার আগমন না ঘটে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জন্য এমনই একজন বিচক্ষণ, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ও সাহসী রাষ্ট্রনায়ক এবং নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন যার জন্ম বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত নাহিদা সোবহান বলেন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশীদের স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন এবং পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের মানচিত্র প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা ও মহান স্বাধীনতার রূপকার। প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও স্বাধিকার আন্দোলনে তিনি ছিলেন বাঙ্গালির আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। তিনি বলেন বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে একটি সেকুলার দেশ এবং একটি উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন জাতি ধর্ম জেন্ডার নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশীর সমান অধিকার। তাই স্বাধীনতার মাত্র এক বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ একটি আধুনিক মানবিক সংবিধান রচনা করতে সমর্থ হয়। তাঁর নেতৃত্বেই একটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত স্বাধীন দেশ ধীরে ধীরে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন এবং দূরদৃষ্টির ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারন করে দেশ প্রেমে উদ্ভুদ্দ হয়ে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে তাই দেশ আজ এগিয়ে চলেছে উন্নয়নের মহাসড়কে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিশ্বের কাছে আজ এক অপার বিস্ময়। মান্যবর রাষ্ট্রদূত বঙ্গবন্ধুর নৈতিকতা বোধ, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ ও মানুষের প্রতি ভালবাসার আদর্শ এই প্রজম্মের শিশু-কিশোরদের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান।
উপস্থিত প্রবাসী বাংলাদেশীদের পক্ষ থেকে জনাব জালাল উদ্দিন আহমেদ ও জনাব আব্দুল্লাহ আল মামুন বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, যতদিন বাংলাদেশ পৃথিবীর মানচিত্রে থাকবে ততদিন এই ১৭ মার্চ বাঙ্গালীর জন্য এক আনন্দময় দিন হিসেবে বিবেচিত হবে। জাতির জনকের জন্মদিনে প্রবাসীরা তাঁকে স্মরণ করছে শ্রদ্ধা ও ভালবাসায়। একটি স্বাধীন দেশ ও একটি পতাকার রূপকার  মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বাঙালি জাতি চির কৃতজ্ঞ, চিরদিন।
অনুষ্ঠান শেষে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক কেটে সবার মাঝে বিতরন করা হয়। উল্লখ্যে, দিবসটি উপলক্ষ্যে দূতাবাসে বাংলাদেশ, সিরিয়া, ফিলিস্থিন ও জর্ডানের শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে এটি চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও শেষ মুহূর্তে জর্ডানের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুরুধে আয়োজনটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়। অনুকুল পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশের শিশু কিশোরদের অংশগ্রহণে উক্ত   চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজনের পরিকল্পনা দূতাবাসের রয়েছে।