জাহিদুল হাসান, জবি প্রতিনিধি : বিগত কয়েকমাস ধরেই ধীরে ধীরে খসে পড়ছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় ও একমাত্র মসজিদটির দেওয়াল। এতে মসজিদে নামাজ পড়তে আসা মুসল্লীদের পড়তে হচ্ছে সমস্যায়৷ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবাসিক হল যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছে প্রত্যেকটি হলের পৃথক মসজিদ। কিন্তু ৩০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত অনাবাসিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র মসজিদটির বর্তমান অবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ মসজিদমুখী শিক্ষার্থীরা।
জবি’র কেন্দ্রীয় মসজিদের এমন অবস্থার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম-কাম-খতিব জনাব মোঃ ছালাহ্ উদ্দিন জানান, “মসজিদের উন্নয়ন কাজ করতে গিয়েই মূলত এসমস্যাটির সৃষ্টি হয়েছে। যখন দোতলায় টাইলসের কাজ শুরু হয়, তখন সেখানে যে পানি ব্যবহারের প্রয়োজন হয়েছিল সেই পানির কারণে নিচতলার ছাঁদের দেওয়াল ভিজে উঠে। তবে অনেকমাস আগেই দোতলার কাজটি সম্পন্ন হলেও নিচতলার ছাঁদের পানি শুকিয়ে আসার অপেক্ষায় প্রশাসন এখনো কাজে হাত দেয়নি। কারণ দেওয়াল সম্পূর্ণ শুকানো ছাড়া কাজটি করলে, কাজটি টিকবে না এবং আবার পরে কাজটি করতে হবে। আর যতটুকু জানি ভেতরে ভেতরে প্রক্রিয়া চলছে, পানি শুকিয়ে আসলেই প্রশাসন এসমস্যার সমাধান করবে বলে জানিয়েছেন।”
এদিকে মসজিদের ছাঁদ খসে পড়ার বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, “মসজিদের এসমস্যার বিষয়ে আমরা অবগত হয়েছি। এটার একটা ফাইলও আমাদের হাতে এসেছে। তবে জুন-জুলাইয়ের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড একদম শেষের দিকে থাকায় কাজটি শুরু করতে দেরি হচ্ছে। শীঘ্রই মসজিদের বিষয়টি আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো।”
অন্যদিকে প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী জানান, “এবিষয়ে ট্রেজারার দপ্তরে ফাইল পাঠানো হয়েছে। ট্রেজারার স্যারের সাথেও সরাসরি কথা হয়েছে। এবং আমি নিজেও মসজিদে গিয়ে সমস্যাটি লক্ষ করেছি। আশা করি এমাসের মধ্যেই আমরা কাজটি শুরু করবো।”
মসজিদের ছাঁদের আস্তরণ ক্রমান্বয়ে খসে পড়ার বিষয়ে প্রশাসন এখনো কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছে শিক্ষার্থীরা৷ মসজিদে নামাজ পড়তে আসা বাংলা বিভাগের ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী আহনাফ হামিদ জানায়, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ইবাদতের জন্য রয়েছে জবি কেন্দ্রীয় মসজিদ। পুরুষ এবং নারীদের জন্য রয়েছে পৃথক নামাজের স্থান। পূর্বে মসজিদ ভবনটি একতলা থাকলেও মাঝেমধ্যে মসজিদের ভেতরে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় প্রায় বছরখানেক আগে মসজিসটি দ্বিতল করা হয়েছে। এতে মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জায়গা সমস্যার সমাধান হয়েছে। কিন্তু যে সমস্যাটি রয়ে গেছে সেটি যে-কোনো সময় মুসল্লিদের জন্য দুর্ঘটনা ডেকে আনতে পারে।নিচতলায় প্রায়ই দেখা যায় ছাদের আস্তরণ এবং রং খসে পড়ছে। ফলে নামাজরত মুসল্লিদের যেমন অস্বস্তিতে পড়তে হয়,তেমনি থাকে দুর্ঘটনার আতঙ্ক। মূলত ভবনটি দ্বিতল করার সময়ে ছাদ ভেজা থাকার কারণে এসমস্যাটি প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে। সমস্যাটি দ্রুত সমাধান না করা হলে যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।তাই জবি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকষর্ণ করছি যেন দ্রুত সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়।