খুলনা টাইগার্সের জন্য ম্যাচটা ছিল স্রেফ নিয়ম রক্ষার। ফরচুন বরিশালের নিজেদের তিনে তোলার সুযোগ। দারুণ লড়াই করেও বরিশাল তিনে উঠতে পারল না।
বিপিএলে নিজেদের শেষ ম্যাচে খুলনা জয় পেল ৬ উইকেটে। আগে ব্যাটিং করে বরিশাল ৮ উইকেটে ১৬৯ রান তুলে। জবাবে বারবার উঠা-নামার পর শেষ ওভারে রোমাঞ্চকর জয় তুলে নেয় খুলনা। লিগে ১২ ম্যাচে যা তাদের তৃতীয় জয়। বরিশাল টানা দ্বিতীয় পরাজয়ে চতুর্থ স্থানে থেকে শেষ করলো সুপার লিগ।
লক্ষ্য তাড়ায় সাব্বিরকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়েছিল খুলনা। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ৬ বলে ২ রান করে প্রিটোরিয়াসের বলে এলবিডব্লিউ হন। অধিনায়ক শাই হোপকে ফেরাতে চতুরঙ্গ ডি সিলভা দারুণ ফিরতি ক্যাচ নেন। তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ পায় খুলনা। অ্যান্ড্রো বালবিরিনকে নিয়ে মাহমুদুল হাসান জয় জুটি গড়েন।
আইরিশ অধিনায়ক ৩৩ বলে ৩৭ রান করে জবাব দিলেও সেখানেই থেমে যান। পেসার খালেদের বলে এলবিডব্লিউ হন। সেখান থেকে জয় একাই টানেন দলকে। তুলে নেন লিগের লিগের দ্বিতীয় ফিফটি। আরেক প্রান্তে ইয়াসির ১৩ বলে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি।
তবে তার আউট লাভই হয়েছে খুলনার। হাবিবুর রহমান সোহান নেমে খেলাটাই যে পাল্টে দেন। প্রথম বিভাগ থেকে উঠে আসা এ ক্রিকেটার যখন মাঠে আসেন তখন ১৯ বলে ৩৯ রান লাগত খুলনার। পরের ওভারে করিম জানাতকে চার মেরে হাত খুলেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১৯তম ওভারে তার ব্যাট থেকে আসে দুই ছক্কা।
তাতে শেষ ওভারে লক্ষ্য ৬ বলে ৯ রানে নেমে আসে। মিরাজের করা ওভারের প্রথম বলে ১ রান নেন জয়। পরের বল উড়াতে গিয়ে সোহান ক্যাচ তুললেও সালমান তা ধরতে পারেননি। উল্টো চার বানিয়ে দেন। ৪ বলে খুলনার দরকার ৪ রান। মিরাজের করা তৃতীয় বলেই জয়ের কাজ সারেন সোহান। হাফ ভলি বল মিড উইকেট দিয়ে উড়িয়ে পাঠান গ্যালারিতে। তার ৯ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কার ঝড়ে খুলনার জয়ের শেষের নায়ক এই নবাগত ব্যাটসম্যান।
এর আগে দুই ম্যাচ খেলার সুযোগ হয়েছিল তার। প্রথম ম্যাচে ৬ ও পরের ম্যাচে ৪ রানের বেশি করতে পারেননি। আজ শেষ সুযোগটি বেশ ভালোভাবে কাজে লাগিয়ে খুলনার নায়ক হয়েছেন সোহান। জয় অপরাজিত ছিলেন ৬৪ রানে। ৪৩ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় সাজান ইনিংসটি।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বরিশালের শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথমবার ওপেনিংয়ে নামা মাহমুদউল্লাহ ২ চার হাঁকিয়ে ভালো কিছুর আশা দেখালেও ৯ রানের বেশি করতে পারেননি। নাসুমের বল সুইপ করে মিড উইকেটে জয়ের হাতে ক্যাচ দেন। চতুরঙ্গ ডি সিলভা প্রমোশন পেয়ে তিনে ব্যাটিংয়ে নামলেও ১৩ বলে ১৪ রানে আটকে যান। বাঁহাতি স্পিনারের বলে হাবিবুর রহমানের হাতে ক্যাচ দেন এ ব্যাটসম্যান।
চারে নেমে সাকিব ঝড় তুলেছিলেন। নাহিদুলকে পরপর দুই বলে লং অন ও লং অফে ছক্কা মারার পর মিড উইকেট নিয়ে চার হাঁকান। মনে হচ্ছিল পুরোনো ছন্দে ফিরে বড় কিছু করবেন। কিন্তু অতি আগ্রাসী হতে গিয়ে বিপদ ডেকে আনেন এ ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদকে উড়াতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ২২ রানে।
এরপর বরিশালের ইনিংস একাই টানেন প্রথমবার খেলতে নামা ডোয়াইন প্রিটোয়ারিয়াস। দক্ষিণ আফ্রিকার এ ক্রিকেটার ২৯ বলে ২ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৮ রান করেন। তাকে সঙ্গ দেন ইব্রাহিম জাদরান ও করিম জানাত। ইব্রাহিম ১৫ বলে ২১ ও জানাত ৯ বলে ১৮ রান করেন।
খুলনার হয়ে বল হাতে ৪ উইকেট নেন সাইফ উদ্দিন। ৪ ওভারে মাত্র ২০ রানে এ সাফল্য পান ডানহাতি পেসার। যা বিপিএলে তার সেরা বোলিং। এছাড়া ২টি করে উইকেট পেয়েছেন নাসুম আহমেদ ও হাসান মুরাদ।