পেয়ার বহুবিধ গুণ, আছে ভিটামিন সি, রয়েছে হরেক রকম পুষ্টিগুণ; সেই সাথে দামেও সবার সাধ্যের মধ্যে। খুব একটা যত্নও লাগে না পেয়ারা চাষে। পৃথীবিতে প্রায় ১০০ টির বেশি প্রজাতির পেয়ারা আছে।
ধারণা করা হয় তিনশ বছর পূর্বে পেয়ারা ভারতবর্ষে আসে। একটি পেয়ারার খাদ্য গুণ কমলার থেকে প্রায় ৪ গুণ বেশি। এ ছাড়াও এই পেয়ারা থেকে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ জ্যাম ও জেলিও তৈরি করা হয়।
জানা যায়, প্রায় শত বছর পূর্বে বছর পূর্বে ঝালকাঠির কীর্ত্তিপাশায় শতদশকাঠি, ভিমরুলি ও ডুমিরিয়া এবং পার্শ্ববর্তী পিরোজপুর উপজেলার নেছারাবাদের (স্বরুপকারী) আটঘর ও কুড়িয়ানা গ্রাম জুড়ে গড়ে ওঠে পেয়ারা বাগান।
আর এই পেয়ারা বাগান কেন্দ্র করেই ঝালকাঠির এতিহ্যবাহী ভিমরুলির ভাসমান পেয়ারার হাট এখন জমজমাট। মৌসুমের মাস জুড়ে ভাসমাস এই পেয়ারার হাটে বেড়েছে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা।
ক্রেতা বিক্রেতার ও পাইকারদের কোলাহলে এখন মুখর ভিমরুলির ভাসমান পেয়ারর হাট। এবার ফলন ভালো। তাই আশাবাদী চাষিরা। দীর্ঘ দিন করোনার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে শুরু করেছেন তারা।
মৌসুমের শুরুতেই এবার জমে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী ঝালকাঠির ভিমরুলির ভাসমান পেয়ারার হাট। গত বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে এখানে পর্যটকের আসা প্রায় বন্ধই ছিলো। এছাড়া লকডাউনে পরিবহন সংকটে গতবার পেয়ারায় লোকসান দিয়েছেন এখানকার চাষিরা।
কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন, এবার তারা লাভের মুখ দেখতে চান। পাইকাররা জানান চাষিদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা মন কিনে খুচরা বাজারে বিক্রি করছেন ৬০০ টাকা।
হাটে আসা পাইকারি ক্রেতা বিক্রেতারা জানান, ভিমরুলির ভাসমান হাটের এ পেয়ারা যাচ্ছে ঢাকা চট্টগ্রামসহ সারাদেশে। পদ্মা সেতু চালু হাবার পরে এখন আর পেয়ারা নষ্ট হচ্ছে না। প্রতিদিনই মিনি ট্রাকে পদ্মা সেতু হয়ে পেয়ারা পৌঁছে যাচ্ছে ঢাকার কারওয়ান বাজারে।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, সদর উপজেলার কীর্ত্তিপাশা ইউনিয়নের ভিমরুলি, খাজুরা, ডুমুরিয়া ও বৈরামপুর গ্রাম এবং নবগ্রাম ইউনিয়নের জগদিশপুর, বৈহার, মীরকাঠি ও কাপড়কাঠি গ্রামেই মুলত পেয়ারার ফলন বেশি হয়ে থাকে। তবে পেয়ারার বড় হাট হয় প্রতিদিন ভিমরুলির খালেই। সদর উপজেলায় এ বছর ৫৩০ হেক্টর জমিতে পেয়ারার চাষ হয়েছে।
উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ হাজার তিনশো মেট্রিক টন। যা আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ৮ কোটি টাকা। পেয়ারায় আছে প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি ও পটাসিয়াম। একটি মাঝারি সাইজের পেয়ারায় ১০০ ক্যালোরি ও ২০ গ্রামের মতো শর্করা থাকে।
ফাইবার থাকে ৯ গ্রাম। চর্বির পরিমাণ খুবই কম-মাত্র ১.৬ গ্রাম। পেয়ারা বেশ প্রোটিনসমৃদ্ধ। একটি পেয়ারায় প্রায় ৪-৫ গ্রাম আমিষ থাকে। ঝালকাঠি সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সুলতানা আফরোজ বলেন, এবারে উৎপাদন ভালো, কৃষি বিভাগের পক্ষ হতে পেয়ারা চাষিদের প্রয়োজনীয় সহয়তা দেয়া হবে।