#

‘পুরনো চাল ভাতে বাড়ে’ জনপ্রিয় একটি প্রবাদ বাক্য। বিশেষ করে সংগীতের বর্তমান অবস্থা লক্ষ্য করলেই দেখা যায় পুরোনো গান বেশি চলে। নতুন অনেক গানই শ্রোতাপ্রিয় হচ্ছে। কিন্তু হিটের বা গ্রহণযোগ্যতার তালিকায় বেশিরভাগই পুরনো গান। প্রতিনিয়তই শত শত নতুন গান প্রকাশ হচ্ছে। তবে তার সিকিভাগও আলোচনায় আসে না, শ্রোতাদের ছুঁয়ে যেতে পারছে না। অন্যদিকে লক্ষ করা যাচ্ছে, পুরনো গান নতুন করে গেয়েই অনেকে আলোচনায় আসছেন, অনেক নবীন ক্যারিয়ার শুরু করছেন, জনপ্রিয়তাও পাচ্ছেন।

ঘুরে ফিরে হিট হচ্ছে পুরনো গান। নতুন শিল্পীরা অভিষেকে বেছে নিচ্ছেন পুরনো জনপ্রিয় কোনো গান। নতুন অনেক গানের দলও পুরনো গান কভার করে আলোচনায় আসছে ও গানকে পেশা হিসেবে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন প্রতিযোগীতা থেকে উঠে আসা শিল্পীদেরও দেখা যায় নিজের মৌলিক গানের চেয়ে প্রচলিত কোনো গান কভার করতে বেশি আগ্রহী। বিভিন্ন টিভি শো ও স্টেজ শো’তেও তারা বেছে নেন পুরনো গানকেই।

বলার অপেক্ষা রাখে না, গানের দেশ বাংলাদেশ। মাটি ও মানুষের লোকগানের বিশাল এক ভাণ্ডার রয়েছে আমাদের। লালন, হাছন, আব্দুল করিম, রাধারমনসহ বহু কালজয়ী গানের মানুষেরা গর্বিত করে রেখেছেন বাংলা গানকে। যুগের পর যুগ পেরিয়েও তাদের সেইসব গান এখনো মানুষের প্রাণ দোলায়, মনকে নাড়িয়ে যায়। নতুন গান ও ভিডিও’র চাকচিক্যের ভিড়েও ওইসব পুরনো গান শ্রোতাদের মোহাবিষ্ট করে রাখছে। আর আধুনিক সংগীত যন্ত্রের সমন্বয়ে ‘ফিউশন’ বা ‘রিমিক্স’র পর সেইসব গান যেন আরও বেশি আবেদনময় হচ্ছে। এইসব গানের তালিকায় রয়েছে অনেক পুরনো সিনেমার গানও।

ভাবায়, একজন আলাউদ্দীন আলী, আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল, শেখ সাদী খান, লাকী আখন্দের মতো সুরকার হয়তো আর পাবো না আমরা। বাউল আব্দুল করিম ও আব্দুল গফুর হালীরাও আসবেন না হর হামেশা। একজন ফিরোজা বেগম, রুনা লায়লা, সাবিনা ইয়াসমিন, তপন চৌধুরী কুমার বিশ্বজিৎ, ফেরদৌস ওয়াহিদরা অনেক দিয়েছেন বাংলা গানকে। তাদের তুলানায় সংগীতের এই প্রজন্মের শিল্পীরা কতটুকু সামর্থ্যবান, শ্রোতাদের কাছে প্রিয় সেই বিচার হয়তো সময় করবে। এখনকার শিল্পীদের কোন গানগুলো টিকে থাকবে সেটাও সময়ের হাতে নির্ভর করছে। তবে আগের মতো করে গান যে তৈরি করতে পারছে নতুন প্রজন্ম সেটা খুব সহজেই অনুমেয়। কিংবা বলা যেতে পারে গানের সেই সোনালী দিন আর নেই। একটা সময় মৌলিক গানের জন্য মুখিয়ে থাকতেন শ্রোতারা। কিন্তু এখন চিত্র উল্টো। আসিফ আকবর, হাবিব ওয়াহিদ, ন্যান্সি, কনা ছাড়া খুব বেশি শিল্পী নেই যাদের মৌলিক গানের প্রতি আগ্রহ আছে শ্রোতাদের।

তারচেয়ে বরং দেখা যাচ্ছে একজন নতুন শিল্পীও খুব সহজেই শ্রোতাদের মনযোগ কাড়তে পারছেন পুরনো জনপ্রিয় কোনো গান গেয়ে। ইউটিউবের কল্যাণে সেই জোয়ারই এখন চারদিকে। সাম্প্রতিককালে সর্বাধিক আলোচনায় আসা গানের তালিকা ঘাঁটলেই তার প্রমাণ মেলে।

২০১৬ বছর তুমুল আলোচিত হয় ‘মধু হই হই বিষ খাওয়াইলা’ শিরোনামে চট্টগ্রামের বেশ জনপ্রিয় একটি গান। তরুণ গায়ক ইমরান হোসাইনের বাদ্যের তালে এই গানটি গেয়ে কোটি মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে দিয়েছে সৈকতপাড়ের ছোট্ট ছেলে জাহিদ। গানটি বছরই ভাইরাল হয়ে পড়েছিল ইন্টারনেটে। সাথে সাথে বদলে গিয়েছে জাহিদের ভাগ্যও। সাগড়ের পাড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের শরীর ম্যাসেজ করে অর্থ উপার্জন করা জাহিদ এখন করপোরেট বিজ্ঞাপনের আইটেম। তার নতুন গানের মিউজিক ভিডিও প্রকাশও হচ্ছে।

একইভাবে সাম্প্রতিক সময়ে সাবিনা ইয়াসমীনের গাওয়া ‘এই মন তোমাকে দিলাম’ গানটি কাভার করে ইউটিউবে রাতারাতি ভাইরাল হয়েছেন মাহতিম সাকিব। আইয়ুব বাচ্চুর জনপ্রিয় গান ‘হাসতে দেখো গাইতে দেখো’ গানটি গেয়ে কিছুদিন আগে আলোচনায় আসে শিশুশিল্পী রাফসানুল ইসলাম।

গানের টিভি চ্যানেল গান বাংলার দারুন এক আয়োজন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের যন্ত্রশিল্পী ও কণ্ঠশিল্পীদের সমন্বয়ে ‘উইন্ড অব চেঞ্জ’ আয়োজনটি। সেখানেও দেখা যায় পুরনো লোকগান, সিনেমা, আধুনিক ও ব্যাণ্ডের গানগুলোই গাওয়া হয়। প্রায় প্রতিটি গানেরই ভিউ দেখা যায় বিশ লাখেরও বেশি। এইসব গানের মধ্যে বাউলদের গানগুলো ভাইরাল হয়েছে। এখানে গাওয়া চিশতী বাউল ও রেশমীর ‘বেহায়া মন’ গানটির ভিউ ৯৮ লাখেরও বেশি। আবার চিশতী বাউলের গাওয়া ‘যদি থাকে নসিবে’ গানটি দেখেছে এক কোটিরও বেশি দর্শক।

সম্প্রতি আলোচিত হওয়া সিলন চায়ের ‘সিলন মিউজিক লাউঞ্জ’ নামের একটি গানের অনুষ্ঠন। সেখানে বাপ্পা মজুমদার, ক্লোজআপ ওয়ানের লিজা, নিশীতাসহ আরও বেশ ক’জন শিল্পীর গাওয়া গান বেশ প্রশংসিত হয়েছে। সেখানেও প্রায় সব গানের ভিউ বিশ লাখের বেশি।

অথচ লাখ লাখ টাকা খরচ করে, প্রচারণার ঝড় তুলে নামি দামি শিল্পীরা মৌলিক গান প্রকাশ করে এমন সাফল্য পাচ্ছেন না। কেন? আলাপচারিতায় উঠে আসছে মানহীন কথার গানই এর জন্য দায়ী। আজকালের গানগুলোতে শ্রোতারা নিজের অনুভূতিগুলোকে মেলাতে পারছেন না, একাত্ম করতে পারছেন না। গানে গল্প নেই, জীবনের বোধ নেই। দায়ী করা হচ্ছে গানের কথার সঙ্গে সুর ও সংগীত পরিচালনার সামঞ্জস্যতার অভাবকেও।

সম্প্রতি কিছু নতুন গানও হিট হয়েছে। তারমধ্যে আরমান আলিফের ‘অপরাধী’ গানটি ছড়িয়েছে মানুষের মুখে মুখে। দশ কোটি ভিউয়ের মাইলফলক ছুঁয়ে গেছে। তবে চটুল কথা, সুরে নকলের অভিযোগে গানটি সার্বজনীনতা পায়নি। হিট হয়েছে, আলোচিত হয়েছে আবারও হারিয়ে যাচ্ছে অল্প দিনের ব্যবধানেই।

সেইদিক থেকে ‘আমি তো ভালা না ভালা লইয়াই থাইকো’ শিরোনামের গানটি ততোটা ভিউ না পেলেও ভাইরাল হয়েছে এবং টিকে থাকার মিছিলে যোগ হতে চলেছে। প্রায় সব মহলের শ্রোতাদের প্রশংসা অর্জন করেছে গানটি। মাহবুব শাহ’র কথায় গানটি গেয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বি। ইউটিউবে দেশে বিদেশের অনেক লিংক দেখা যাচ্ছে যারা গানটির কাভার করে আপলোড করছেন। অনেক শিল্পীদেরকেও দেখা যাচ্ছে টিভি ও স্টেজ শো’তে গিয়ে গানটি গাইছেন। গানটির ফোকধর্মী আমেজ, সহজ-সুন্দর কথা ও সুরই একে শ্রোতাপ্রিয় করে তুলেছে বলে অভিমত সংগীতবোদ্ধাদের। পাশাপাশি অনেকে ‘আমি তো ভালা না ভালা লইয়াই থাইকো’ বাক্যটিকেই গানের সাফল্যের ক্রেডিট দিচ্ছেন। তাদের মতে সারাদেশেই খুব জনপ্রিয় এই বাক্য। মানুষের মুখে মুখে ফিরে প্রতিদিন। গানের সুরে বাক্যটিকে পেয়ে শ্রোতারা লুফে নিয়েছেন।

তবে বছরজুড়ে এমন নতুন গানের সাফল্য খুব কমই দেখা হয়। পুরনো গানের সঙ্গে তুলনায় টিকতেই পারছে না নতুন গানগুলো। কেন? এই বিষয় নিয়ে সঙ্গে কথা বলেছেন সংগীতাঙ্গনের কয়েকজন গুণী মানুষ। নন্দিত সুরকার আলাউদ্দীন আলী বলেন, ‘শুধু গানই না। একটা ভালো ছবি গত ১৫-২০ বছরের মধ্যে কেউ আঁকতে পারেনি যা সবার মনকে আন্দোলিত করেছে। নির্মলেন্দু গুণের মতো হুট করে কানে লাগে এমন একটা কবিতাও কেউ লিখতে পারে নাই। বাঁশ দিয়ে ছাদ ঢালাই করার মতো একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে আমাদের শিল্প চর্চায়। পুরো সংস্কৃতিটাই যেন এমন বাঁশের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। অশিক্ষা, সাধনা না করা ও অশ্রদ্ধার কারণে কিছু হচ্ছে না। একজন অগ্রজকে সম্মান করতে জানতে হবে। নকল করে যেমন পরিক্ষায় পাশ করে এমন নকল করে এখন গান হচ্ছে। নকল ছবি আঁকা হচ্ছে। নকল মাছ বিক্রি হচ্ছে। বিশেষ করে সংগীতে বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায় হলো, সুশিক্ষা, গুরুজনদের শ্রদ্ধা করা ও সাধনা করা। মানুষের জীবনকে বুঝতে শেখা। তাদের দুঃখ ও আনন্দগুলো গানের মাঝে থাকতে হবে। শ্রোতারা সব গানেই নিজেকে খুঁজে পেতে চায়।’

আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল বলেন, ‘আগের গানগুলোকে নতুন আয়োজনে গাওয়ার একটা ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। বিভিন্ন কম্পিটিশন থেকে উঠে আসা শিল্পীদের মধ্যে এটা বেশি। নতুন শিল্পী যারা আসছে তাদের নতুন মৌলিক গান থাকা উচিৎ। তার একটা পরিচয় থাকা উচিৎ সে কোন গানের শিল্পী। একজন শ্রোতা তার গান শুনে তাকে স্বীকৃতি দেবে তারপরে তো সে শিল্পী হবে। পরের গান গেয়ে শিল্পী কিভাবে হয় এটা আমারও প্রশ্ন! আগের গানগুলো গেয়েই তারা সামনে আসছে। সেগুলো নিয়েই বেঁচে আছে। অন্যের গান গাওয়া শিল্পীদের চাল চলন দেখে মনে হয় সে মূল শিল্পীর চেয়েও বড় শিল্পী। আসলে এখন করপোরেট সিস্টেমে চলছে সব। করপোরেট মহাশয় যাকে সাপোর্ট দিচ্ছে সেই নতুন সুরকার, সংগীত পরিচালক একটা গান তৈরি করতে দুই লক্ষ-তিন লক্ষ টাকা নিচ্ছে। করপোরেট প্রয়োজন ফুরালে সে হারিয়ে যাচ্ছে। এভাবে শিল্প চলে? অনেক সম্ভাবনাময় শিল্পী দেখছি যারা প্রতিষ্ঠিত শিল্পীর থেকেও ভালো গান করে। তারা সুযোগ পাচ্ছে না।’

কণ্ঠশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ বলেন, ‘ভালো গান হচ্ছে না তা নয়। তবে শ্রোতাদের পছন্দ অনুযায়ী হচ্ছে না বলা যেতে পারে। এখন ইমোশনের চেয়ে প্রমোশনের দিকে খেয়াল বেশি মানুষের। কিন্তু বুঝতে হবে আমরা খুব ইমোশনাল জাতি। শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণিই সংস্কৃতি লালন করে। এখন গান হচ্ছে অন্য শ্রেণিকে প্রাধান্য দিয়ে। এ কারণেও নতুন গানগুলো শ্রোতাবিচ্ছিন্ন থাকছে। গান তিন প্রকার। চোখের গান, কানের গান। দুই রকম গান আমরা করতে পারছি। পরেরটা পারছি না বলে কোনো গান টিকছে না। বাধ্য হয়ে পেছনে যেতে হচ্ছে যেখানে প্রাণের গান রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘গান হচ্ছে উপলব্ধির বিষয়। বাজার এক জিনিস, সৃষ্টিশীল কাজ আরেক জিনিস। ওদের দৃষ্টিটা ব্যাবসায়িক। প্রাণের গান হচ্ছে কম। এখন কানের ও চোখের গান হচ্ছে। প্রডাকশন হাউজগুলো দায়ি এর জন্য। তারা ভাবছে কিভাবে চটকদারি একটা কিছু করা যায়। যেগুলো আমাদের সংস্কৃতির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নাই। কেউ কেউ বলে আমাদের আন্তর্জাতিক মানের গান হচ্ছে। এটা হালকা রসিকতা ছাড়া আর কিছু না। কেউ কেউ বলে আমরা আন্তর্জাতিক বাজারেও এগিয়ে যাচ্ছি। দেখেন রবীন্দ্রনাথ কিন্তু চটকদারি গান দিয়ে নোবেল পায়নি। কিন্তু তিনি আন্তর্জাতিক গীতিকবি হয়েছিলেন। এখন হঠাৎ করে ভিউয়ার্স পাওয়ার বাসনা সবার। গানের মতো গান হলে গান ঠিকই বের হয়ে আসবে। এখন অস্তিত্ব টিকাতে গিয়ে অনেক সময় আদর্শ বিকিয়ে দিতে হয়। আদর্শ বিকিয়ে দিলে নিজের অস্তিত্ব থাকবে না।’

সংগীত প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জি সিরিজের কর্ণধার খালিদ হোসেন বলেন, ‘জনপ্রিয় গান এখনো হচ্ছে, সব সময়ই জনপ্রিয় গান হয়। অনেক আগে শোনা গানগুলোর স্মৃতি রোমন্থন করি আমরা। সেটা আমাদের ভালো লাগে। এজন্যই অতীতকে বলা হয় স্বর্গ আর বর্তমানকে বলা হয় নরক। বর্তমানেও গান জনপ্রিয় হচ্ছে। সেটা উপলব্দি করা যাবে আরও পরে। সময়ের সাথে সাথে গানের উপযোগীতা তৈরি হয়। স্মৃতির সঙ্গে গানের একটা সম্পর্ক আছে। আবার গোষ্ঠিগত রুচি অনুযায়ীও গান জনপ্রিয় হয়।’

তর্ক বিতর্ক যাই হোক, এ কথা সত্যি মৌলিক গান না থাকলে টিকে থাকা যায় না। তেমনি হচ্ছে আজকাল। পুরনো গান দিয়ে সহজেই লাইম লাইটে আসলেও কেউই টিকে থাকছেন না। ১৫ বছর আগে ‘কৃষ্ণ’ অ্যালবাম দিয়ে রাজকীয় অভিষেক ঘটেছিলো গায়ক কায়ার। হাবিব ওয়াহিদের সংগীতে সেই অ্যালবামের সব গানই ছিলো তুমুল হিট। কিন্তু শিল্পী হিসেবে নিজেকে কিন্তু প্রতিষ্ঠিত করতে পারেননি কায়া। মৌলিক গানের অভাবেই। তেমনি করে পুরনো গানকে প্রাধান্য দেয়া শিল্পীরা কালের স্রোতে হারিয়ে যান, উত্থানের মতোই চমক দেখিয়ে। তাই টিকে থাকতে মৌলিক গানের চর্চার বিকল্প নেই।

নদীর মতো গানের ভুবনেও থাকে জোয়ার ভাটা। গান থেমে নেই এটাই বড় কথা। একদিন ঠিকই বদলে যাবে সব। সব অস্থিরতা দূর হয়ে গানের পালে লাগবে সুবাতাস। আজকে তৈরি হবে আগামী দিনের জন্য অনেক কালজয়ী গান, এটুকুই প্রত্যাশা।

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন