‘বাবা, ফাইলটাতে সব ঠিকমতো গুছিয়ে রেখেছ? এডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন কার্ড, কলম, সাইনপেন, স্কেল, ইরেজার ইত্যাদি সবকিছু ঠিকমতো নিয়েছ? রিভিশন শেষ হলে রেস্ট নাও, আজ তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়বে।’
এ উদ্বিগ্ন কণ্ঠ রাজধানীর লালবাগের বাসিন্দা গৃহবধূ আসমা বেগমের। আগামীকাল থেকে তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। এ পরীক্ষা নিয়ে গত কয়েকদিন যাবত আসমা বেগমের বলতে গেলে নাওয়া-খাওয়া হারাম হয়ে গেছে! পরীক্ষার্থী ছেলের চেয়ে মায়ের চিন্তাই যেন বেশি। এ দৃশ্য দেখে তার শ্বশুর মুচকি হেসে বলেন, ‘নাতি আমার ছোট এসএসসি দিচ্ছে।’
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, এখনকার পড়াশোনা নিয়ে সবাই কেমন যেন আতঙ্কগ্রস্ত। আমাদের আমলে এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা নিয়েও বাবা-মায়েরা এতটা উদ্বিগ্ন হতো না বলে দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন তিনি।
আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টায় বাংলা পরীক্ষার মধ্যে দিয়ে চলতি বছরের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা শুরু হবে। এ দুই পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে ২৬ লাখ ৬১ হাজার ৬৮২ জন শিক্ষার্থী। এ বছর জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর মধ্যে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীর সংখ্যা ২ লাখ ১৮ হাজার ২৯২ বেশি।
পরীক্ষা সূচি অনুযায়ী, ২ নভেম্বর থেকে জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হবে ১১ নভেম্বর। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হবে।
জানা গেছে, এবারও পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে। প্রতিবন্ধীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় দেয়া হবে। যাদের হাত নেই তাদের জন্য দেয়া হবে শ্রুতি লেখক।
পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম, ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ। পরীক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়া অন্য কেউ কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না। কেউ প্রবেশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বছর বিদেশে মোট নয়টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রগুলো হচ্ছে- জেদ্দা, রিয়াদ, মদিনা, ত্রিপলি, দোহা, সাহাম, বাহরাইন, আবুধাবি ও দুবাই। বিদেশের কেন্দ্রগুলোর মোট পরীক্ষার্থী সংখ্যা ৪৫৪ জন।