রংপুরের পীরগঞ্জে দেলদার মিয়া (৬০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। খুনের চার বছর পর জানা গেলো ছেলের হাতেই খুন হয়েছেন তিনি। এ ঘটনায় অভিযুক্ত লেবু মিয়াকে (৩৭) গ্রেফতার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, ২০১৮ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি উপজেলার চাপাবাড়ি গ্রামের দেলদার মিয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুদিন পর মারা যান দেলদার মিয়া।
এ বিষয়ে রংপুর মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা করা হয়। কিন্তু ময়নাতদন্তে ভিন্ন রিপোর্ট আসে। পরে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলাটি কোতোয়ালি থানা হতে পীরগঞ্জ থানায় পাঠানো হলে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করা হয়। পুলিশ পরিদর্শক আমিনুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করতে না পেরে ২০১৯ সালের ৫ জুলাই চূড়ান্ত রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন। আদালত মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
জাকির হোসেন আরও জানান, ঘটনার দিন দেলদার মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রীর কন্যা দেলোয়ারা বেগম কিছু বাঁশ ও বাঁশখড়ি নেওয়ার জন্য বাবার বাড়ি আসেন। এ নিয়ে দেলদার মিয়ার ৪র্থ স্ত্রী শাহার বানুর সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। বাঁশঝাড়ে দেলোয়ারা বেগম বাঁশ কাটতে গেলে দেলদার মিয়া সেখানে গিয়ে বাধা সৃষ্টি করেন। তখন দেলোয়ারা বেগমের ভাই লেবু মিয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে বাবার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে বাঁশঝাড়ে থাকা কাটা বাঁশ হাতে নিয়ে দেলদার মিয়ার মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মৃত্যুর ঘটনাকে দুর্ঘটনা বলে প্রচারও করা হয়। এরপর থেকে ছেলে লেবু মিয়া গা ঢাকা দেন।
তিনি আরও বলেন, সোমবার লেবু মিয়াকে গ্রেফতার করে পিবিআই। পরে লেবু মিয়া হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। পরিবারের লোকজন আন্তরিকভাবে সহায়তা না করায় মামলার রহস্য উদ্ঘাটনে সময় লেগেছে।