‘হঠাৎ কী যে হলো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মনে হলো মাথায় আসমান ভেঙে পরতাছে। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে আল্লাহকে ডাকছিলাম। মুহূর্তের মধ্যেই সব ঘটে গেলো।’
বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে আসা ঢাকাগামী যাত্রী আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তার শিশুপুত্র সাজ্জাদকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।
উদ্ধারের পর অনেকটা ঘোরের মধ্যে ছিলেন তিনি। কিছুটা ধাতস্ত হয়ে তিনি বললেন, ‘এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়িটি বেশ দ্রুত গতিতে চলছিল। কিছুক্ষণ পরেই পদ্মা সেতু। এমন আলোচনা করছিল যাত্রীরা। হঠাৎ করেই গাড়িটি রাস্তা থেকে লাফিয়ে নিচে পড়ে যাচ্ছিল। ওই সময়ে সন্তানকে বুকে জড়িয়ে ধরেছিলাম।’
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বাগেরহাটের মোল্লার হাট থেকে ভোর ৬টায় গাড়িতে উঠি। ঢাকার ধানমন্ডি বড় বোনের বাসায় যাচ্ছিলাম। দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার মুহুর্তে মনে হয় জ্ঞান ছিল না। গাড়ির মধ্য থেকে কে বা কারা বের করে আনছে তা মনে নাই! স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে এখনো।’
উল্লেখ্য, রোববার (১৯ মার্চ) সকালে মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় বাস দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৭ জন মারা গেছেন। আহত হয়েছেন অনেকে। তবে আনোয়ারা বেগম ও তার ছেলে সুস্থ আছে। খবর পেয়ে তার পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসেছেন এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বাড়ি ফিরে যাবেন বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ১৪
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই ১৪ জন মারা যান। আহত হন অনেকে। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে ৩ জনের মৃত্যু হয়।
ঘটনাস্থলে এখনও পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।