অমর একুশে বইমেলার তৃতীয় দিন আজ। ভাষার মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিনে বাঙালির প্রাণের মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের দিনে মেলা প্রাঙ্গণ ছিল ‘অগোছালো’। দ্বিতীয় দিনে কিছুটা ভিড় বাড়ে। আজ তৃতীয় দিনে ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। এবারের বইমেলার প্রথম ছুটির দিন। এদিন লেখক-প্রকাশক-পাঠকের পদচারণায় বেশ মুখরিত হয়ে উঠে বইমেলা প্রাঙ্গণ। ক্রেতা-দর্শনার্থী বাড়ায় ব্যস্ততা বাড়ে স্টলে স্টলে। প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা বলছেন, ২০২০-২০২১ সালে করোনার কারণে ‘ছন্দহীন’ বইমেলা এবার জমে ওঠার আভাস দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার (৩ ফেব্রুয়ারি) বইমেলা ঘুরে ও লেখক-পাঠক-প্রকাশকদের সঙ্গে আলাপে এমন তথ্য জানা গেছে। এদিন দুপুর থেকে মেলায় আসতে শুরু করেন পাঠক-দর্শনার্থীরা। শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে সারিবদ্ধ হয়ে প্রবেশ করেন তারা। শিশু থেকে প্রবীণ, সব বয়সী মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ছুটির দিন হওয়ায় অনেকে পরিবার-পরিজন ও বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বইমেলায় এসেছেন।
পুরানা ঢাকা থেকে আসা ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আজকেই প্রথম মেলায় এলাম। ছুটির দিন হওয়ায় অনেক মানুষ দেখছি। মেলায় বেশকিছু স্টলে ঘুরলাম, বই দেখলাম। বেশ ভালো লাগছে।’
ধানমন্ডি থেকে আসা ফাইজা শারমিন বলেন, ‘বইমেলায় শেষ দিকে বেশি চাপ থাকে। এজন্য বন্ধুদের সঙ্গে শুরুতেই চলে এলাম বই কিনতে। অনেক ভিড় দেখছি। মাঠে ধুলাবালি উড়ছে। হাঁটাচলা বেশ কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।’
শুরুর দিকে মেলায় পাঠক-দর্শনার্থীদের এমন ভিড়ে খুশি লেখক-প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। অন্বেষা প্রকাশনের বিক্রয়কর্মী শাহরিয়ার জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবারের মেলায় আজই প্রথম ছুটির দিন। অনেক ভিড় দেখছি। গতকালের তুলনায় আজ অনেক মানুষ এসেছে। কেনাবেচাও বেড়েছে।’
লেখক জামশেদ নাজিম জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০২০ ও ২০২১ সালে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে একুশে বইমেলা ছন্দহীন ছিল। এবার মেলার প্রাণ ফিরেছে। নিকট অতীতে মেলার তৃতীয় দিনে এতটা জমজমাট হতে দেখিনি। মেলায় প্রচুর পাঠক এসেছেন, তারা বই কিনছে। কাগজের দাম বেশি, বইয়ের দামও বেশি। এ উচ্চমূল্যেও যে পাঠকরা বই কিনছেন, এটা তো ইতিবাচক।’
লেখক তৌয়বা মনির বলেন, ‘মেলায় আজকেই প্রথম এলাম। প্রথম দিনেই এসে দেখছি, আমার বই বিক্রি হচ্ছে। মনে হচ্ছে, এবার মেলায় মানুষের ভিড় ও আগ্রহ বেড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে বেশ ভালো হবে।’
‘ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ’র প্রকাশক জহিরুল আবেদীন জুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, ‘২০২২ সালেও করোনার কারণে বইমেলা কিছুটা দেরিতে শুরু হয়েছিল। এবার যথাসময়ে শুরু হয়েছে। মেলা শুরুর পর আজ ছুটির দিনে পাঠক ও দর্শনার্থীদের ভালো সমাগম দেখছি। শেষদিকে বই বিক্রি বেশি হয়। তবে শুরুর দিক হিসেবে আজকে বিক্রি মোটামুটি ভালোই চলছে। পরিস্থিতি যা দেখছি, তাতে আশা জাগছে- এবার বই বিক্রি আগের তুলনায় বেশি হবে।’