ছুটির দিনে কুয়াকাটা সৈকতে হাজারো পর্যটক

:
: ২ years ago

ফেব্রুয়ারির শুরুতেই বইছে দক্ষিণা বাতাস। শীতের তীব্রতা কমে গেছে। তবে সন্ধ্যা নামার আগেই কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে পুরো আকাশ। সূর্যের দেখা মেলে সকাল ১০টার পরে। ঘন কুয়াশার মধ্যেও কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে হাজারো পর্যটক মিলিত হয়েছেন। কুয়াশা কেটে রোদের দেখা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রে গোসলে নামছেন পর্যটকরা।

শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ছুটির দিনে কুয়াকাটা সৈকতে হাজারো পর্যটকের আগমনে আনন্দিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে পর্যটকদের সংখ্যা কমে গিয়েছিল। ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম শুক্রবার হাজার হাজার পর্যটকের আগমনে কুয়াকাটায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। এতে খুশি সৈকত এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। গত জানুয়ারির শেষ শুক্রবারের তুলনায় ফেব্রুয়ারির প্রথম শুক্রবার বেচাকেনা দ্বিগুণ হয়েছে।

সৈকতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. ঝন্টু মিয়া বলেন, ঘন কুয়াশার মধ্যে আজ (শুক্রবার) এত পর্যটক আসবে ধারণা ছিল না। বেচাকেনা খুব ভালো হয়েছে। দোকানে অনেক মালের ঘাটতি হয়েছে।

কুয়াকাটা সৈকত ঘুরে দেখা যায়, পর্যটকরা সমুদ্রের তীরে আছড়ে পড়া ঢেউয়ের তালে তালে গোসল করছেন। মোবাইলে ফোনে সেলফি তোলায় ব্যস্ত অনেকে। ওয়াটার বাইকে গভীর সমুদ্রে যাচ্ছেন কেউ কেউ। ছাতার নিচে বসে সমুদ্রের রূপ অবলোকন করছে শিশু ও বৃদ্ধরা। টিউব নিয়ে সাঁতার কাটছে কিশোরীরা। তবে পর্যটকদের মধ্যে করোনার কোনো ভয় দেখা যায়নি। ভয়কে জয় করেই তারা ঘুরতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন। মাস্ক পরার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশের মাইকিংয়ে কর্ণপাত করছেন না কেউ।

নারায়ণগঞ্জ থেকে পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় এসেছেন মুন্না-সেতু দম্পতি। কথা হয় তাদের সঙ্গে। তারা বলেন, এই প্রথম পরিবারের সবাই মিলে কুয়াকাটায় এসেছি। খুবই ভালো লাগছে। সময় পেলে আবার আসব। এখানকার পরিবেশ খুবই ভালো।

বরিশালের উজিরপুর থেকে আবু হানিফ এসেছেন বন্ধুদের সঙ্গে। তিনি দ্বিতীয় বার কুয়াকাটায় এসেছেন। তিনি বলেন, প্রথমবার এসেছিলাম শীতের শুরুতে তখন তেমন ঢেউ ছিল না। আজ (শুক্রবার) হালকা দখিণা বাতাস অনেক ঢেউ দেখছি। শীত কম তাই গোসল করতে নেমেছি।

কুয়াকাটা সৈকতে বেঞ্চ-ছাতা ব্যবসায়ী আবির হাসান বলেন, গত দুই-তিন শুক্রবারও আশানুরূপ পর্যটক ছিল না। আজ অনেক পর্যটক এসেছে। আশা করছি দিন দিন পর্যটকদের সংখ্যা বাড়বে।

সি ভিউ আবাসিক হোটেলের ম্যানেজার মো. সোলায়মান ফরাজী বলেন, গত শুক্রবারের চেয়ে আজ অনেক বেশি পর্যটক এসেছেন। আমাদের হোটেলের সবগুলো রুম বুকিং হয়েছে।

কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (কুটুম) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, ফেব্রুয়ারি মাস হলো পর্যটনের ভরা মৌসুম। একদিকে শীত কমতে থাকে অন্যদিকে পর্যটকদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। আজ এত সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটবে ধারণা ছিল না। পর্যটকনির্ভর ব্যবসায়ীরা বেশ খুশি হয়েছেন। ব্যবসায়ীদের চোখে মুখে আনন্দের ছাপ লক্ষ্য করেছি।

ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের পরিদর্শক হাসনাইন পারভেজ বলেন, গত কয়েক দিন তুলনামূলক পর্যটক কম ছিল। আজ অনেক পর্যটকের আগমন ঘটেছে। আমরা পর্যটকদের মাস্ক পরতে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে মাইকিং করছি। তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে টহল জোরদার করেছি।