‘চোখ বেঁধে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়’

:
: ৬ years ago

সরকারি চাকরির কোটা সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় তিন নেতা বলেছেন, গোয়েন্দা পুলিশ তাদের গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে গেছে। সেখানে কোনো জিজ্ঞাসাবাদ না করেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এ ঘটনাকে ‘অপহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করে সোমবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ মিছিল করে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক নুরুল হক নূর দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা ন্যায়ের পথে আন্দোলন করেছি, কিন্তু পুলিশ আমাদের তুলে নিয়ে যাচ্ছে। নানাভাবে আমাদের হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমরা নিরাপদ বোধ করছি না।’

সোমবার বেলা পৌনে একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রবেশ ফটকের সামনে রিকশা থেকে ওই তিন নেতাকে নামিয়ে মাইক্রোবাসে করে পুলিশ তুলে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ উঠে। তারা হলেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের তিন যুগ্ম আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র নুরুল্লাহ নূর, এমবিএর (ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগ) ছাত্র রাশেদ খান এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ফারুক হোসেন।

পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার পর সোমবার বিকেলে তিনটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে ওই তিন নেতা বলেন, গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে পৌনে একটার দিকে তাদের একটি গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হয়। চোখ খুলে দেওয়ার পর দেখেন, তারা একটি কক্ষে। সেখানে তাদের বলা হয়, তাদের কিছু ভিডিও ফুটেজ দেখানো হবে। কিন্তু তাদের কিছুই দেখানো হয়নি। পরে তাদের নাম-ঠিকানা নিয়ে পৌনে তিনটার দিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মিন্টো রোডে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে তাদের নেওয়া হয়েছিল। এ সময় তাদের কোনো নির্যাতন করা হয়নি।

তবে গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার দেবদাস ভট্টাচার্য সমকালকে বলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

এর আগে সোমবার সকাল ১১টার দিকে ঢাবি’র কেন্দ্রীয় লাইব্রেবির সামনে এক সংবাদ সম্মেলন করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের এই তিন নেতা।

কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের পক্ষ থেকে করা মামলাগুলো আগামী দুই দিনের মধ্যে প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নেতারা বলেন, একটি কুচক্রী মহল কেন্দ্রীয় কমিটির বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। আমাদের জামায়াত-শিবির পরিচয় দিতে চাইছে, যা পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আন্দোলন ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এসব করা হচ্ছে। এ ধরনের বিষয় প্রচার করা হলে আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলব।

তারা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের দাবি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু আমাদের ভিন্ন পরিচয় দিয়ে আন্দোলন ভিন্নপথে প্রবাহিত করার চেষ্টা চলছে। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। যারা এসব করছেন, তাদের বলি, আমরা যদি আন্দোলন গড়ে তুলি, পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।