চার্জশিটে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশিরসহ ১৪ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। চার্জশিটের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেছেন মামলার বাদী মোহাম্মদ আলী।
সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ। চার্জশিট দাখিলের পরই বাদী আদালতে নারাজি দিতে সময়ের আবেদন করেন। আগামী ২৬ জানুয়ারি নারাজি আবেদন ও চার্জশিট গ্রহণের জন্য শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পরিচালক সাইফুল ইসলাম শিশির, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মীর মর্তুজা আলী বাবু, গণস্বাস্থ্যর প্রশাসনিক কর্মকর্তা আব্দুস সালাম, গণবিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর শাহ আলম, দোলোয়ার হোসেন, ইকরাম হোসেন, আওলাদ হোসেন, আরিফ, লুৎফর রহমান, রাসেল, অনিল কুমার ভৌমিক, সোহেল রানা, আবুল কালাম আজাদ ও সাদ্দাম হোসেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই হারুন অর রশিদ চার্জশিটে উল্লেখ করেন, উল্লেখিত আসামিদের বিরুদ্ধে পেনাল কোড আইনের ১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩৭৯/৩৮০/৪২৭/৫০০/৫০৬ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হলো। তবে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আরেক আসামি লেহাজের সঠিক নাম-ঠিকানা পাওয়া যায়নি। এজন্য ডা. জাফরুল্লাহ ও লেহাজকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতির প্রার্থনা জানাচ্ছি। আসামি লেহাজকে গ্রেফতার করা গেলে বা নাম-ঠিকানা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।
সাভারের আশুলিয়ায় কানাডিয়ান কলেজে ভাঙচুর ও মালামাল চুরির অভিযোগে মোহাম্মদ আলী নামে এক ব্যক্তি ২০১৯ সালের ১২ জুলাই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীসহ ১৬ জনের নামে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, বাদী মোহাম্মদ আলী ও তার কয়েকজন বন্ধু মিলে আশুলিয়া থানাধীন পাখালিয়া ৪ দশমিক ২৪ একর সম্পত্তি ক্রয় করে চারপাশে পাকা বাউন্ডারি ওয়াল ও গেট নির্মাণ করে ভোগদখল করে আসছিলেন। তারা ওই জমিতে কানাডিয়ান কলেজ প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করছিলেন। সেখানে তাদের কলেজের আরও একটি ভবন নির্মাণকাজ চলছিল। মামলার আসামি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাদের সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের উদ্দেশ্যে পাঁয়তারাসহ বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আসছিলেন।
এজাহারে আরও অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই মামলার এজাহারনামীয় আসামিরা ভেকু নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন। বাদীর সম্পত্তির মূল গেট ও বাউন্ডারি ওয়াল ভাঙচুর করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অবৈধভাবে প্রবেশ করে সেখানে থাকা নিরাপত্তারক্ষীদের এলোপাতাড়ি মারপিট করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন।
এছাড়া আসামিরা বাদীর কলেজের অফিসকক্ষে থাকা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করেন। অফিসে থাকা তিনটি কম্পিউটার, ৮২টি চেয়ার, ২৮টি সিলিংফ্যান, তিনটি ফায়ার এক্সিট ডিভাইস চুরি করে ট্রাকযোগে নিয়ে যান। যার মোট মূল্য তিন লাখ ৯ হাজার ১০০ টাকা। এছাড়া আসামিরা পালিয়ে যাওয়ার সময় কলেজের আলমারি ভেঙে শিক্ষার্থীদের মূল সনদপত্রসহ অন্যান্য মূল্যবান কাগজপত্র লুট করে নিয়ে যান।