জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দল এবং সভানেত্রীর বরাদ দিয়ে ‘চূড়ান্ত’ ‘গ্রিন সিগন্যাল’ পাওয়ার কথা বলে যারা প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন, তারা নিজ থেকে মনগড়া কথা বলছেন। এমন প্রচারণায় বিভ্রান্তি ছড়ালে অথবা নির্বাচনে বিরূপ প্রভাব ফেললে দোষীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। দলীয় সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা জানান, ‘নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও প্রার্থী তালিকা এখনও চূড়ান্ত করেনি আওয়ামী লীগ। কে কোন আসন থেকে নির্বাচন করবে, তা দলের সভানেত্রী ছাড়া আপাতত কেউ জানার কথা নয়। সভানেত্রী সব খবর রাখছেন। সময় মতো সব জানানো হবে।’
তিনি বলেন, ‘দল বা সভানেত্রীর নাম করে যারা প্রচার চালাচ্ছেন, তাদের ব্যাপারে সংগঠন অবগত। এমন প্রচারণায় দল বা নির্বাচনী পরিস্থিতি খারাপ হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মনোনয়ন নিয়ে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না নিলেও অনেকেই নির্বাচন করার সিগন্যাল পেয়েছেন বলে মাঠে নেমেছেন। এসব নেতা তাদের কর্মী বা অনুগতদের বুঝিয়ে আসছেন যে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা তার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আবার অনেকেই বলছেন, দলের পক্ষ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই মাঠে নামা হয়েছে। প্রার্থী তালিকা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমও সংবাদ প্রকাশ করে আসছে বিভিন্ন অসমর্থিত সূত্রের বরাদ দিয়ে। অভিযোগ রয়েছে নিজেদের প্রচার এবং মাঠ দখলের জন্যই বিভ্রান্তকর তথ্য দিয়ে গণমাধ্যমকে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে এসব নেতারা।
সাম্প্রতি প্রার্থী তালিকা এবং প্রচার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রার্থী চূড়ান্ত করার একক ক্ষমতা সভনেত্রী শেখ হাসিনার। অন্য কেউ তা জানার কথা নয়।’
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, দলীয় প্রার্থীদের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন সভানেত্রী। এর আগে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রার্থী যাচাই হচ্ছে। এই যাচাই প্রক্রিয়া চলমান। তাহলে তালিকা চূড়ান্ত হয় কী করে?
স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। জোটের সঙ্গেও আসন ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে আমাদের। এমন অবস্থায় কেউ যদি দল এবং সভানেত্রীর নাম নিয়ে বলে যে, তার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, তাহলে এর দায় ওই ব্যক্তির।
একই বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কর্নেল (অব.) ফারুক খান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি গণতান্ত্রিক দল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েই নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করা হয়। এবারও তাই হচ্ছে। জনগণের মধ্যে কোন প্রার্থীর অবস্থান কী, তার জন্য দল বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখবে তৃণমূলের মতামত। জেলা-উপজেলার নেতকর্মীদের কাছ থেকে মতামত নেয়া হচ্ছে। এরপর দলের মনোনয়ন বোর্ডে আলোচনা হবে। সব যাচাই করে সভানেত্রী শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত দেবেন কে প্রার্থী হবেন।
প্রার্থী তালিকা আর প্রচার-প্রচারণা প্রসঙ্গে ফারুক খান বলেন, অনেকেই মনোনয়ন পেতে দলের সভনেত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসেন। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে মাঠে থাকতে বলে আশীর্বাদ দিয়ে থাকেন। এই ‘আশীর্বাদ’ যদি কেউ মনে করেন ‘চূড়ান্ত’ সিদ্ধান্ত, তাহলে ভুল করবেন। এখনও কোনো তালিকা চূড়ান্ত হয়নি। প্রার্থী তালিকার ব্যাপারে সভানেত্রীই ভালো জানেন। এ ব্যাপারে অন্য কেউ সিদ্ধান্ত দিতে পারেন না। অবাক হই যখন দেখি, ১শ বা ২শ প্রার্থীর নাম দিয়ে তালিকা দিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়! এতে করে অনেকেই বিভ্রান্ত হচ্ছে বলে আমাদের কাছে খবর আসছে। এমন প্রচারণায় দল বা নির্বাচনে ক্ষতি হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com