#

টাঙ্গাইলে চুরির অপবাদ সইতে না পেরে চিরকুট লিখে মো. আজাদ মিয়া (২৪) নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন।

মঙ্গলবার (১৮ মে) দুপুরে চারাবাগ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত আজাদ নাগরপুর উপজেলার মামুদনগর ইউনিয়নের চারাবাগ গ্রামের মো. মেহের আলীর ছেলে। তিনি ওই গ্রামে অবস্থিত করটিয়া সা’দত বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, আজাদ পাশের বাড়ির শওকতের ছোট ছেলেকে প্রাইভেট পড়াতেন। শওকত প্রবাসী হওয়ায় তার স্ত্রী একই গ্রামের রাসেলের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া করে আসছেন। তারা আজাদকে চোরের অপবাদ দিয়ে আত্মহত্যায় বাধ্য করতে পারেন।

মৃত আজাদ মিয়ার রেখে যাওয়া চিরকুটটি  পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

‘মৃত্যুর আগে কেউ মিথ্যে কথা বলে না, এখন আমি সত্য কথা বলে দুনিয়ার বুক থেকে চলে যাব। রাসেলের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্ক। কিন্তু শওকতের স্ত্রীর সঙ্গে রাসেলের অবৈধ সম্পর্ক আছে। মাঝে মধ্যে তারা অসামাজিক কার্যকলাপে লিপ্ত হতো, যা আমি দেখে ফেলি। বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য মাঝে মধ্যে আমাকে টাকা দিত রাসেল।’

‘এদিকে শওকতের স্ত্রী কুলসুম পাশের এলাকার তোফার স্ত্রী গেন্দির কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা ধার আনে। গেন্দি টাকা ফেরত পেতে চাপ দেয়। কুলসুম টাকা ফেরত চাওয়ার বিষয়টি রাসেলকে জানায়। তোফার স্ত্রীর টাকা যাতে ফেরত দেয়া না লাগে রাসেল ও কুলসুম মিলে পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রাসেল আমাকে ফোন দিয়ে শওকতের বাড়িতে যেতে বলে। যাওয়ার পরে রাসেল বলে, কুলসুমের ফোন কিছুক্ষণের জন্য তোর কাছে রাখবি। পরে কুলসুম ফোন খোঁজাখুঁজি করলে তুই বলবি যে তোফার স্ত্রী গেন্দি তোরে ফোনটা দিয়েছে। তখন গেন্দিকে চোরের অপবাদ দিব যাতে টাকা ফেরত দিতে না হয়। পরে পরিকল্পনার বিপরীত ঘটিয়ে মোবাইল চোরের অপবাদটা আমার ওপর চাপিয়ে দেয়া হয়। আমার মা বাবা ও সমাজের কথা চিন্তা করে আমি তা কিছুতেই মেনে নিতে পারি না। চোরের অপবাদ সইতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলাম।’

নাগরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনিসুর রহমান বলেন, ‘আত্মহত্যার সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাই। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট ও অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

উত্তর দিন

Please enter your comment!
এখানে আপনার নাম লিখুন