চীনা পাসপোর্টধারীদের সিঙ্গাপুর প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

সর্বশেষ গত ১৪ দিন যারা চীনা মূল ভূখণ্ডে কাটিয়েছেন তাদের জন্য সিঙ্গাপুর প্রবেশ ও ট্রানজিটে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে। চীনের উহান শহরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করায় নিজ জাতির সুরক্ষায় এ পদক্ষেপ নিয়েছে সিঙ্গাপুর।

চীনফেরত এক নারী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর শুক্রবার দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে এমন ঘোষণা এসেছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার অন্যান্য সিঙ্গাপুরিয়ানদের সঙ্গে উহান শহর ত্যাগ করেন ৪৭ বছর বয়সী ওই নারী। শুক্রবার সন্ধ্যায় দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, ফ্লাইটে প্রবেশের আগে এ ভাইরাসের কোনো লক্ষণ তার মধ্যে দেখা যায়নি। চাঙ্গি এয়ারপোর্টে পৌঁছালে মেডিকেল স্ক্রিনিংয়ের সময় তার শরীরে জ্বর ধরা পড়ে। শুক্রবার দুপুরে পরীক্ষায় তার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। বর্তমানে তাকে আইসোলেশন কক্ষে রাখা হয়েছে।

ওই ঘটনার পর সন্ধ্যায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়, যারা দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গাপুরে বসবাস করছেন বা যারা সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা, তারা বাদে কোনো চীনা পাসপোর্টধারীকে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না। তবে যেসব চীনা পাসপোর্টধারী দেখাতে পারবেন যে, তারা সম্প্রতি চীনে যাননি, তাহলে কেস-বাই-কেস বিবেচনায় তাদের সিঙ্গাপুরে প্রবেশে অনুমতি দেয়া হতে পারে।

এদিকে জাতীয় উন্নয়্ন মন্ত্রী লরেন্স অং শুক্রবার বলেছেন, ‘সিঙ্গাপুরিয়ান, স্থায়ী বাসিন্দা ও সিঙ্গাপুরে দীর্ঘদিন ধরে থাকছেন-এমন কেউ চীন থেকে ফেরত এলে তাদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের ছুটিতে রাখা হবে।’

চীনে এ পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২১৩ জন। আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৮৭ জন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যের বাল্টিমোর শহরে অবস্থিত জন হপকিনস ইউনিভার্সিটি একটি রিয়েল-টাইম ম্যাপ তৈরি করেছে। এই ম্যাপের সর্বশেষ (৩০ জানুয়ারি) দেয়া তথ্যে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত বিশ্বে নিশ্চিত মোট ৯ হাজার ৭৭৬ জনের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চীনে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৬৫৮ জন। থাইল্যান্ডে ১৪, হংকংয়ে ১২, জাপানে ১১, সিঙ্গাপুরে ১০, অস্ট্রেলিয়ায় ৯, তাইওয়ানে ৯, মালয়েশিয়ায় ৮, ম্যাকাওয়ে ৭, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৬, যুক্তরাষ্ট্রে ৬, ফ্রান্সে ৬ (একজন চিকিৎসকসহ) ও জার্মানিতে ৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। দেশটির প্রধান মেডিকেল কর্মকর্তা শুক্রবার এই ঘোষণা দিয়েছেন। আক্রান্ত দুই ব্যক্তি একই পরিবারের সদস্য।

এদিকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় বৃহস্পতিবার বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। বৃহস্পতিবার জেনেভায় এক জরুরি বৈঠক শেষে এ ঘোষণা দেয় সংস্থাটি।

সূত্র: দ্য স্ট্রেইটস টাইমস