>> হাজি ক্যাম্পের তৃতীয়-চতুর্থ তলায় থাকবেন তারা
>> তিন শিফটে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক-নার্স থাকবে
>> কেউ ক্যাম্পের বাইরে যেতে পারবেন না
>> দেখা করতে পারবেন না আত্মীয়স্বজনের সঙ্গেও
>> চিকিৎসাসহ সব খরচ বহন করবে সরকার
চীন থেকে ৩৬১ বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট দেশটিতে গেছে। তাদের নিয়ে বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে শুক্রবার দিবাগত রাত ২ বা ৩টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
দেশে ফিরলেও আপাতত চীনফেরত নাগরিকদের সঙ্গে তাদের স্বজনেরা দেখা করতে পারবেন না। তাদের কেউ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারে এবং তাদের মাধ্যমে অন্যরা সংক্রমিত হতে পারে- এমন আশঙ্কায় অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে স্বজনদের সঙ্গে আপাতত দেখা করতে দেয়া হবে না।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ শুক্রবার সন্ধ্যায় জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আশকোনা হজ ক্যাম্পে ‘কোয়ারেন্টাইন’ অবস্থায় রাখা হবে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের যৌথ মেডিকেল টিম নিয়মিতভাবে চীন ফেরত বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ফলোআপসহ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত থাকবে।
‘আশকোনা হজ ক্যাম্পে অবস্থানকালীন সময়ে তাদের খাবার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসাসহ দৈনন্দিন সব প্রয়োজনীয় সামগ্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে সরবরাহ করা হবে। তাদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ দল সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের অভিভাবক ও পবিরারের সদস্যদের আতঙ্কিত না হওয়ার এবং বিমানবন্দর ও আশকোনা হজ ক্যাম্প এলাকায় অবস্থান না করার জন্য অনুরোধ জানানো যাচ্ছে। আশকোনা হজ ক্যাম্পে অবস্থানকালীন সময়ে চীন থেকে ফিরে আসা বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্যগত তথ্য তাদের অভিভাবক ও পবিরারের সদস্যদের নিয়মিতভাবে অবহিত করা হবে।
মহাপরিচালক বলেন, চীনফেরত বাংলাদেশি সবার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত সবাইকে হজ ক্যাম্পের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে।
এদিকে সন্ধ্যায় আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সাবরিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন একটি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। এ সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পূর্ণ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর ও আইইডিসিআর যৌথভাবে ‘২০১৯-করোনাভাইরাস’ কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এ কন্ট্রোল রুম থেকে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
গতকাল (৩০ জানুয়ারি ) সন্ধ্যায় চীনের উহানে বসবাসরত ৩৬১ বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে প্রত্যাবর্তন বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় দেশে প্রত্যাবর্তনকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের চীন থেকে দেশে নিয়ে আসা এবং প্রত্যাবর্তন পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এবং মহাপরচিালক, স্বাস্থ্য অধিদফতরসহ অধিদফতরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ সকালে চীনে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে হযরত শাহ্জালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সভায় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিনিধিরা।