৫০ বলে ২১টিই ডট। বাকি ২৯ বলে রান ৭৮। ৬টি করে চার ও ছক্কায় এনামুল হক বিজয় যে ঝড় তুললেন তাতে সিলেটের দর্শকরা মেতে উঠলো আনন্দে। পয়সা উসুল শো।
বিজয়ে শুরু। করিম জানাতে শেষ। তার ১২ বলে ৩১ রানের বিধ্বংসী ফিনিশিংয়ে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের দেওয়া ১৬৮ রানের লক্ষ্য ফরচুন বরিশাল ছুঁয়ে ফেলে ৪ বল হাতে রেখে। জয় তুলে নেয় ৩ উইকেটে।
টস হেরে আগে ব্যাটিং করে চট্টগ্রাম ৬ উইকেটে ১৬৮ রান করে। জবাবে ভালো শুরুর পর মিডল অর্ডারে ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ছন্দ হারায় বরিশাল। কিন্তু এনামুলের ৭৮ ও জানাতের ৩১ রানে বরিশাল জয়ে ফিরে সিলেটকে সরিয়ে উঠে গেল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে।
এনামুলের ইনিংসটি স্কোরবোর্ডে দেখে যতটা দৃষ্টিনন্দন মনে হচ্ছে আদতে এ রান করতেও ভুগেছেন। প্রথম ১১ বলে রান করেছিলেন মাত্র ১। পরের দুই বলে দুই বিশাল ছক্কা। পেসার রানার বল পুল করে চোখের পলকেই পাঠিয়েছেন মাঠের বাইরে। দুই বলের ব্যবধানে স্পিনার শুভাগত হোমকে পরপর দুই ছক্কা উড়িয়েছেন ডিপ মিড উইকেট দিয়ে। পাওয়ার প্লে’র শেষ ওভারে কাম্পারকে টানা চার বলে একটি ছক্কা ও তিনটি চার হাঁকিয়ে তুলে নেন ফিফটি।
২৭ বলে আসে তার ফিফটি। যেখানে ১১ বলে রান ছিল ১। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বৃত্তের সুবিধা কাজে লাগিয়ে এনামুল ফিফটি তুলে নিলেও মাইলফলকে পৌঁছার পর আবার রান তোলায় ভুগতে থাকেন। পরের ১২ বলে তার ব্যাট থেকে আসে মাত্র ৫ রান। কাম্পার নিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে এসে আবার খুলে দেন এনামুলের হাত। ছক্কা ও দুই চার মেরে আইরিশ পেসারকে এলোমেলো করে দেন। ডানহাতি পেসারের ১০ বলে এনামুল ৩৫ রান তুলে বাড়িয়ে নেন নিজের স্ট্রাইক রেট। শেষমেশ তার ইনিংসটি থামে মৃত্যুঞ্জয়ের এক স্লোয়ারে। এগিয়ে এসে তুলে মারতে গিয়ে বল মিস করে বোল্ড হন।
বরিশালের ইনিংসে ধস নামান চট্টগ্রামের স্পিনার নিহাদুজ্জামান। সাকিব আল হাসানকে বোল্ডের পর মাহমুদউল্লাহকে গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ দেন। বাঁহাতি স্পিনার মাহমুদউল্লাহকে এগিয়ে আসতে দেখে ওয়াইড ইয়র্কার দেন। স্টাম্পিংয়ের বাকি কাজ সারেন ইরফান শুক্কুর। এরপর চতুরঙ্গ ডি সিলভাকেও দারুণ চতুরতায় স্টাম্পড করেন। তার চতুর্থ শিকার ছিল ইফতেখার আহমেদ। আর্ম ডেলিভারিতে বোল্ড করেন পাকিস্তানের হার্ডহিটারকে। ৪ ওভারে ১৭ রানে তার ৪ উইকেট দলকে জেতাতে যথেষ্ট ছিল না।
বিপর্যয়ে দলের হাল ধরে প্রতি আক্রমণে গিয়ে ঝড় তোলেন করিম জানাত। তাকে সঙ্গ দেন সালমান। দুজনের ২১ বলে ৫০ রানের জুটিতে বরিশাল পেয়ে যায় জয়। ১২ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩১ রান করেন করিম। সালমান ১৪ বলে ১৮ রান করেন।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে চট্টগ্রামের শুরুটা একদমই ভালো হয়নি। মেহেদী মারুফ জীবন পাওয়ার পরও ৫ রানে মোহাম্মদ ওয়াসিমকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ড্রেসিংরুমে ফেরেন। একাদশে ফিরে ৩ চারে উন্মুক্ত চাঁদ ভালো কিছুর আশা দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ১৩ বলে ১৬ রানের ইনিংসটি কাটা পড়ে খালেদের বলে সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। চট্টগ্রামের বিপদ আরও বাড়তে পারত।
আফিফ হোসেন ক্রিজে এসেই থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ তোলেন। সেখানে রাব্বীর হাত ফসকে বেরিয়ে যায় বল। জীবন পেয়ে এ ব্যাটসম্যান ২৩ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৩৭ রান করেন। আগের ম্যাচে দলে থেকেও অসুস্থতার কারণে ব্যাটিং করতে পারেননি।
আরেকপ্রান্তে থাকা ওপেনার ম্যাক্স ও’ডউড ৩৪ বলে ৩৩ রানের মন্থর ইনিংস খেলেন। দীর্ঘদেহী এ ব্যাটসম্যান পাওয়ার প্লে’তে নিষ্প্রভ ছিলেন।
আগের ম্যাচে শুভাগত হোম ঝড় তুলেছিলেন। কিন্তু এ ম্যাচে ৫ বলে ২ রান করে নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন। আইরিশ ক্রিকেটার কুরটিস কাম্পার দুদিন আগেই দলের সঙ্গে যোগ দেন। গতকাল এক সেশন করেছেন অনুশীলন। তাতেই নিজেই ঝালিয়ে নিতে পেরেছেন। শেষ দিকে তার ২৫ বলে ৪ চার ও ২ ছক্কায় খেলা ৪৫ রানের ইনিংসটি চট্টগ্রামের পুঁজি বড় করে দেয়।
তবে অপরপ্রান্তে থাকা ইরফান শুক্কুর দলের দাবি মেটাতে পারেননি। ১৯ বলে ১টি করে চার ও ছক্কায় ২০ রান করেন। তাদের জুটিতে আসে ৩৯ বলে ৬৬ রান।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com