চাচাতো বোনের হয়ে পরীক্ষা দিচ্ছিল পাখি, অবশেষে জেলে

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

চাচাতো বোনের বদলে দাখিল পরীক্ষার বাংলা প্রথমপত্রে অংশ নিতে গিয়ে যশোরের মনিরামপুরে স্বপ্না খাতুন পাখি (২৪) নামে এক নারীকে আটক করে দুই বছরের সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এ সময় আদালতকে মিথ্যা বলায় মাদরাসা শিক্ষক আবু তৈয়বকে (৩৮) এক বছরের সাজা দেয়া হয়েছে।

বুধবার দুপুর ১২টার নেংগুড়াহাট দারুল উলুস সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান আদালত পরিচালনা করে তাদের এ সাজা দেন।

স্বপ্না মনিরামপুরের পাড়দীয়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম দফাদারের মেয়ে। তিনি তার চাচাতো বোন পাড়দীয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার পরীক্ষার্থী সোনিয়া খাতুনের হয়ে দাখিল পরীক্ষা দিচ্ছিলেন। আর সাজাপ্রাপ্ত শিক্ষক আবু তৈয়ব পাড়দীয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক। তিনি ওই কেন্দ্রে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন।

আদালত সূত্র মতে, নেংগুড়াহাট দারুল উলুস সিনিয়র ফাজিল মাদরাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে একজনের বদলে আরেকজন পরীক্ষা দিচ্ছেন এমন অভিযোগ পেয়ে বুধবার সেখানে যান মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান। তিনি কেন্দ্রের ছয় নম্বর কক্ষে গিয়ে প্রথমে স্বপ্নাকে প্রশ্ন করেন। তারপর প্রবেশপত্রের ছবির সঙ্গে স্বপ্নার চেহারার মিল খোঁজার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রবেশপত্রের ছবি অস্পষ্ট হওয়ায় স্বপ্নাকে চিহ্নিত করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তখন ওই কক্ষের পাড়দীয়া মাদরাসার অন্যান্য পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে তিনি নিশ্চিত হন পরীক্ষায় অংশ নেয়া মেয়েটি সোনিয়া না। এরপর পাশের কক্ষে দায়িত্বে থাকা পাড়দীয়া মাদরাসার শিক্ষক আবু তেয়বকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে আদালতকে জানান, এ মেয়েটিই সোনিয়া। পরে অবশ্য স্বপ্না ও আবু তৈয়ব আদালতের কাছে দোষ স্বীকার করেন। এজন্য আদালত স্বপ্নাকে দুই বছর ও শিক্ষক তৈয়বকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।

মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওবায়দুর রহমান বলেন, পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এর ৩ (খ) ধারায় স্বপ্নাকে দুই বছর ও শিক্ষক আবু তৈয়বকে ওই আইনের ১৩ ধারায় সাজা দেয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে স্বপ্নাকে পরীক্ষার্থী সাজিয়ে পরীক্ষা দেয়ার কাজে সহযোগিতার অপরাধে পাড়দীয়া মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মাওলানা মহিববুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করার জন্য নেংগুড়াহাট ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রের সচিব মাওলানা আব্দুর রউফকে নির্দেশ দিয়েছেন।