চাকুরি বিধি লঙ্ঘন করে সাংবাদিকতা, ১২ শিক্ষককে নোটিশ

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

শেরপুরে চাকুরি বিধি লঙ্ঘন করে সাংবাদিকতা করায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত ১২ শিক্ষককে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। সোমবার (২৩ অক্টোবর) জেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তা মো. রেজুয়ানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্রে জানা যায়, জেলার বিভিন্ন সরকারি, আধা সরকারি কলেজ এবং মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কর্মরত সহকারী শিক্ষক ও প্রভাষক পদে কর্মরত অবস্থায় চাকুরি বিধি লঙ্ঘন করে দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করে আসছেন। তাদের বিরুদ্ধে কেনো বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করা হবে না তা আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর জন্য বলা হয়েছে।

 

নোটিশ পাওয়া শিক্ষকরা হলেন- শেরপুর সদর উপজেলার ফসিউল দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. মেরাজ উদ্দীন, আল জামিয়াতুল ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষিকা সাবিহা জামান শাপলা, বানের্শ্বদী দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. মোশারফ হোসেন, কলাপাড়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মো. হারুন অর রশিদ, শাহরিয়ার দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মোহাম্মদ হযরত আলী, ভটপুর আলিম মাদ্রাসার শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, মডেল গার্লস ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মাসুদ হাসান বাদল, চন্দ্রকোনা কলেজের প্রভাষক মহিউদ্দিন সোহেল, সরকারী হাজি জাল মাহমুদ কলেজের প্রভাষক ড. মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আকন্দ, সরকারী হাজি জাল মাহমুদ কলেজের প্রভাষক আব্দুল মোত্তালিব সেলিম, নিজাম উদ্দিন কলেজের প্রভাষক রীতেশ কর্মকার ও মো. মোক্তারুজ্জামান।

কারণ দর্শানো নোটিশে বলা হয়, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০২২ এর অনুচ্ছেদ ১১.১৭, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত) এর অনুচ্ছেদ ১১.১০(ক) এবং বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ এর অনুচ্ছেদ ১৫.১ মোতাবেক এমপিওভুক্ত কোনো শিক্ষক কর্মচারী একই সঙ্গে একাধিক কোনো পদে/চাকরিতে বা আর্থিক লাভজনক কোনো পদে নিয়োজিত থাকতে পারবে না।

এদিকে উল্লেখিত শিক্ষকরা তথ্য গোপন করে সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত হওয়ায় সময় মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সময় না দিয়ে সাংবাদিকতায় সময় দিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। ইতিমধ্যে এক শিক্ষক ও সাংবাদিক নেতা মেরাজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলায় পিবিআই চার্জশিট প্রদান করেছে।

 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শেরপুরের একজন সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, ‘সাংবাদিকতা একটা মহান পেশা, শিক্ষকতাও একটি মহান পেশা। তাই এই পেশাকে কুলশিত করা তাদের ঠিক হয়নি। তারা সারাদিন সংবাদ খুঁজে বেড়ায়, ক্লাস করায় কখন? এমনকি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের লোকজনের পাশের চেয়ারে বসে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সরকারি প্রোগ্রামে সাংবাদিক হিসেবে খবর সংগ্রহ করতে দেখা যায়। প্রশাসন কেনো এ ব্যাপারে নীরব তা আমার বোধগম্য নয়। তারা যে পেশায় থাকুক একটি বেছে নেওয়া উচিত।’

শেরপুর মডেল গার্লস মডেল ডিগ্রী কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শেরপুরের পৌর মেয়র গোলাম কিবরিয়া লিটন বলেন, ‘সরকারি প্রজ্ঞাপনে চাকুরির পাশাপাশি সাংবাদিকতায় যদি নিষেধাজ্ঞা থাকে তবে অভিযোগ পেলে সেই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

জেলা শিক্ষা অফিসার মো. রেজুয়ান বলেন, ‘আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে, জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’