চাকুরিচ্যুত হচ্ছেন বরিশাল হাতেম আলী কলেজ অধ্যক্ষ!

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

বয়স জালিয়াতি করে ২ বছর চাকুরীর মেয়াদ বাড়িয়েছেন সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক সচীন কুমার রায়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত কমিটি এ জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে। এরপর মাউসির মহাপরিচালকের কাছে ওই প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।

প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই অধ্যক্ষকে চাকুরীচ্যুত করার চুড়ান্ত নোটিশ প্রদান করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। একইসাথে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনে ১০ দিন সময় বেধে দেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ে তিনি জবাব না দিলে তিনি চাকুরীবিধি অনুসারে চাকুরীচ্যুত হয়ে যাবেন।

গত রোববার (০৮ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অধ্যাপক সচীন কুমার রায়কে চাকুরীচ্যুত করার নোটিশ প্রদান করেন। একইসাথে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ১০দিন সময় প্রদান করা হয় ওই নোটিশে। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয় বয়স জালিয়াতির প্রমাণ মেলায় অধ্যাপক সচীন কুমার রায়কে সরকারী কর্মচারী(শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ১৯৮৫ এর ৩(বি) ও ৩ (ডি) মোতাবেক অসদাচরন ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আর এ অভিযোগে কেন তাকে চাকুরীচ্যুত করা হবে না তার কারণ জানতে চাওয়া হয়েছে।

বরিশালের সরকারি হাতেম আলী কলেজের অধ্যক্ষ সচীন কুমার রায় জালিয়াতি করে দুই বছর বয়স কমিয়ে চাকরির মেয়াদ বাড়িয়েছেন। পদে বহাল থাকার জন্য জন্মতারিখ সংশোধন করে নিজের বয়স দুই বছর কমিয়েছেন তিনি। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তদন্ত প্রতিবেদনে এসংক্রান্ত প্রমাণ পাওয়া গেছে। আর ওই তদন্ত প্রতিবেদন গত ১৯ মার্চ সোমবার তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন মহাপরিচালকের কাছে জমা দিয়েছেন। আর এর প্রেক্ষিতে গত রবিবার(০৮ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ অধ্যাপক সচীন কুমার রায়কে চাকুরীচ্যুত করার নোটিশ প্রদান করেন। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক সচীন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে জন্ম তারিখ পরিবর্তনের অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। আর সরকারি চাকুরীবিধি অনুসারে এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ তাই এ অপরাধে সে অভিযুক্ত।

মাউসির গঠন করা তদন্ত কমিটির প্রদান করা তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় ‘সপ্তম বিসিএসের সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৮৭ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন সচীন কুমার রায়। তখনকার নথিতে সচীন কুমারের জন্মতারিখ ১৯৫৮ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। চাকরিতে যোগদানের ২৭ বছর পর ২০১৪ সালে অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি ও পদায়নের সময় তাঁর বয়স পরিবর্তন করে ১৯৬০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি বলে উল্লেখ করা হয়। সরকারি চাকরিতে এফিডেভিট (বয়স কমানোর দালিলিক প্রমাণ) গ্রহণযোগ্য নয়। সিভিল সার্ভিস রুলের বিধি-৯ অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তা তাঁর বয়স সংশোধন করতে পারেন না।’ কিন্তু অধ্যাপক সচীন এমনটি জালিয়াতির অশ্যয় নিয়ে করেছেন তা তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।

একইসাথে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি তার অবসরে যাবার কথা থাকলেও তিনি এখনও ওই পদে বহাল থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন।