চাঁদপুরের ফরক্কাবাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাংচুর করেছে শিক্ষার্থীরা।
শনিবার দুপুরে ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা শেষে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান জানান, ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ব্যয়ভার কলেজ কর্তৃপক্ষ বহন করার আশ্বাস দিয়েছে। এই কেন্দ্রে ৩৫১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।
তিনি জানান, চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কানিজ ফাতেমার নেতৃত্বে গঠিত কমিটির অপর সদস্যরা হলেন সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মাহবুবুর রহমান ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামরুল হাসান। আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী সদর উপজেলা এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিষেক দাস জানান, তিনি শনিবার সদর উপজেলার ফরাক্কাবাদ পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছিলেন। পরীক্ষা শুরুর এক ঘন্টা পর তিনি ওই কেন্দ্রে গিয়ে প্রায় ২ ঘন্টা দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘ সময় অবস্থান করায় পরীক্ষা শেষে কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে পরীক্ষার্থীরা তার গাড়ি ভাংচুর করে। ঘটনার সময় তিনি পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কলেজের সামনে থাকা গাড়িটি ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ির সামনে ও পেছনের সব কাঁচ ভাংচুর করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করা হয়।
খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চাঁদপুর থেকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে। ঘটনার পরপর চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।
চাঁদপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, এই ঘটনায় কেউ আহত হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
পরীক্ষা কেন্দ্রের হল সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমি ম্যাজিস্ট্রেটের সহযোগিতা চাই। আজকে পরীক্ষার হল খুব শৃঙ্খল ও সুন্দর ছিল। ছাত্ররা অনৈতিক সুবিধা আদায় করতে ব্যর্থ হওয়ায় এই হামলা চালায়।
ফরক্কাবাদ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. হাসান খান জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রে শান্তিপূর্ণভাবে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে স্থানীয় বহিরাগত কয়েকজনের উস্কানিতে শিক্ষার্থীরা সংঘবদ্ধ হয়ে গাড়ি ভাংচুর করে। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। ঘটনার সাথে জড়িতের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।
ফরক্কাবাদ স্কুল এন্ড কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি সুজিত রায় নন্দী বলেন, যারাই অপরাধী হোক না কেন তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে আমার প্রতিষ্ঠান থেকে একজন ছাত্রও পরীক্ষায় পাশ করতে ব্যর্থ হবে। তবুও প্রতিষ্ঠানের কোনো প্রকার ক্ষতি হতে দেওয়া হবে না। কোনো ছাত্র অন্যায় করে ছাড় পাবে না।