চাঁদপুরে কলেজ অধ্যক্ষকে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী আটক

লেখক:
প্রকাশ: ৬ years ago

চাঁদপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামের স্ত্রী কেন্দ্রীয় মহিলা লীগের সদস্য ও গল্লাক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ শাহীন সুলতানা ফেন্সিকে (৫০) গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

সোমবার (৪ জুন) রাত ১০টার দিকে শহরের পাকা মসজিদ এলাকায় নিজ বাড়িতে তাকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। পুলিশ তার স্বামী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে।

ফেন্সির ভাই ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু নঈমের অভিযোগ করে বলেন, তার (ফেন্সি) স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম তাকে হত্যা করেছে। কারণ, জহিরুল ইসলাম কয়েক বছর আগে আরেকটি বিয়ে করেছেন। সেটি নিয়ে পরিবারের মধ্যে দ্ব›দ্ব ছিল।

আরেক ভাই ফোরকান বলেন, এ হত্যাকাণ্ড পূর্বপরিকল্পিত। দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে তাদের ঘরে ঝামেলা ছিল। সে কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে।

তবে ফেন্সির স্বামী অ্যাডভোকেট জহিরুল ইসলাম বলেন, আমি বাসায় ছিলাম না। বাসায় এসে দেখি রুমের দরজা খোলা। রুমের মেঝেতে তার দেহ পড়ে আছে। পরে আমার চিৎকারে লোকজন ছুটে আসে।

নিহতের স্বজনরা জানান, তাদের দাম্পত্য জীবন ২০ বছরেরও বেশি। তাদের তিন মেয়ের মধ্যে দুজন দেশের বাইরে আরেকজন কুমিল্লা মেডিকেলে পড়ছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার ফেন্সি একজন সদালাপী মানুষ ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সক্রিয় একজন কর্মী ছিলেন।

জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

খবর পেয়ে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, আইনজীবী সমিতির সভাপতি আব্দুল লতিফ, সম্পাদকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল বলেন, এটি একটি মর্মান্তিক ঘটনা। আমরা হতবাক।

চাঁদপুর জেলা মহিলা লীগ নেত্রী ফরিদা ইলিয়াছ বলেন, তিনি ছাত্রলীগ থেকে শুরু করে তিন দশকেরও বেশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।

উল্লেখ্য, চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন শাহিন সুলতানা ফেন্সি। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের চাঁদপুর জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক হিসেবে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় মহিলা সংস্থা চাঁদপুরের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

ইতিপূর্বে বেগম আইভী রহমান ও অধ্যাপিকা খালেদা খানমের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মহলিা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা ছিলেন তিনি। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার মহিলা সম্পাদিকা ছিলেন।

এছাড়া তিনি চাঁদপুর জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থা, জেলা মহিলা সমিতি ও চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী সমিতির আহ্বায়ক এবং মহিলা কলেজ পুনর্মিলনী কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ছাত্রজীবনে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়েছেন।