বরিশালে চরমোনাই মাহফিলের ময়দান পরিদর্শনে বিএমপি কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান

লেখক:
প্রকাশ: ৫ years ago

চরমোনাই দরবার শরীফের ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক মাহফিল শুরু হবে বুধবার। জোহরের নামাজের পর চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম উদ্বােধনী বয়ানের মাধ্যমে মাহফিলের সূচনা করবেন। পীর অনুসারী হাজার হাজার মুসুল্লী ইতিমধ্যে চরমোনাইর মাহফিল প্রাঙ্গনে পৌছেছেন। বছরে দুটি মাহফিলের মধ্যে ফাল্গুন মাসের মাহফিলটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হিসাবে গণ্য করেন চরমোনাই পীর অনুসারীরা। কয়েক লাখ মুসুল্লী এ মাহফিলে অংশগ্রহন করেন। চরমোনাই মাদরাসার অধ্যক্ষ ও পীরের ভাই মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী জানান, মাহফিলের সকল প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে।

চরমোনাই দরবার শরীফের শুরু হচ্ছে ৩ দিনব্যাপী বার্ষিক ওয়াজ মাহফিল। বুধবার বাদ জোহর চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের উদ্বােধনী বয়ানের মাধ্যমে মাহফিলের সূচনা করবেন। তাই এরই মধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আসতে শুরু করেছে ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা।

বছরে দুটি মাহফিলের মধ্যে ফাল্গুন মাসের মাহফিলটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন হিসাবে গণ্য করেন চরমোনাই পীর অনুসারীরা। কয়েক লাখ মুসুল্লী এ মাহফিলে অংশগ্রহন করেন বলে ধারনা তাদের। তাই নিরাপত্তার বিষয়টিতেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। মুসল্লীদের নিরাপত্তায় ময়দান জুড়ে পাঁচশ পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প।

এছাড়া মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) চরমোনাই ময়দান পরিদর্শন করেছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান-বিপিএম (বার)। তিনি নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজ খবরের পাশাপাশি মাহফিলের আয়োজক কমিটিকে দিয়েছেন বিভিন্ন দিক নির্দেশনা।

চরমোনাইয়ের মাহফিলে আগত কয়েক লাখ মুসল্লীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কয়েক স্তরের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। তাছাড়াও মুসল্লীদের স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং যাতায়াত নিরাপদ করতে চরমোনাই মাহফিল ময়দান পরিদর্শন করেছেন বিএমপি কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান। মঙ্গলবার দুপুর দুইটায় তিনি মাহফিল ময়দান, মেডিকেল ক্যাম্প, খাবার দোকান, বিভিন্ন স্টল, বিএমপি কন্ট্রোল রুম সহ সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন এবং আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকল কর্মকর্তাবৃন্দের সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেন।

এসময়ে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিএমপি  প্রলয় চিসিম,উপ-পুলিশ কমিশনার নগর বিশেষ শাখা বিএমপি  মোঃ জুলফিকার আলী হায়দার , উপ-পুলিশ কমিশনার সদর দপ্তর বিএমপি আবু রায়হান মুহাম্মদ সালেহ্, উপ-পুলিশ কমিশনার দক্ষিণ মোঃ মোকতার হোসেন পিপিএম-সেবা, উপ-পুলিশ কমিশনার ট্রাফিক বিএমপি জাকির হোসেন মজুমদার পিপিএম-সেবা, উপ-পুলিশ কমিশনার ডিবি বিএমপি মোঃ জাহাঙ্গির মল্লিক ,উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর বিএমপি মোঃ খাইরুল আলম ,অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর বিএমপি মোঃ আবুল কালাম আজাদসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।

কোতয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, মাহফিলে আগত মুসল্লীদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তায় মেট্রোপলিটন পুলিশের পোশাকধারী আড়াই শ’ এবং সাদা পোশাকে আরও আড়াই শ’ পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। কমিশনার স্যার মাহফিল সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করবেন।

আয়োজক কমিটি জানিয়েছে, মাহফিলে মুসুল্লীদের জন্য ৫টি মাঠ করা হয়েছে। মঙ্গলবার ফজরের নামাজের পর পরই সবগুলো মাঠ মুসুল্লীতে পূরিপূর্ন হয়ে যায়। আগত মুসুল্লীরা আশপাশের বাড়িঘর এবং ফাঁকা জায়গায় মুসুল্লীরা অবস্থান নিয়েছেন। মাহফিলে সার্বিক সহযোগীতা নিয়ে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃগ্ধখলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গেও হয়েছে ইতিমধ্যে।

মাহফিলের মিডিয়া সেলের প্রধান মো. শরিয়ত উল্লাহ জানান, প্রতিদিন ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর চরমোনাই পীর মাহফিলে বয়না করবেন। তিনি মোট ৫টি বয়ান করবেন। আগামী শনিবার সকাল ৮টায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে মাহফিল শেষ হবে।

এছাড়া মাহফিলের তৃতীয় দিন বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ওলামা-মাশায়েখ মহাসমাবেশ এবং তৃতীয় দিন শুক্রবার সকাল ১০টায় ছাত্র আন্দোলনের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এগুলো মুলত চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজনৈতিক মহাসমাবেশে পরিনত হয়। সকলস্তরের নেতাকর্মী এবং পীর অনুসারীরা মাহফিলে অংশ নেওয়ায় দলটির রাজনৈতিক অনেক গুরুত্বপূর্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ফাল্গুন মাসের বার্ষিক মাহফিলে।