চট্টগ্রামে রাতেও ট্রাফিক সামলাচ্ছে ছাত্রীরা

লেখক:
প্রকাশ: ৪ মাস আগে

রাত তখন ৮টা। চট্টগ্রামের চকবাজার মোড়ে লাঠি হাতে সড়কে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকজন নারী। দূর থেকে দেখে মনে হয়েছে, কোথাও হয়ত গন্ডগোল বাঁধাল। কিন্তু কাছে যেতেই ভুল ভাঙলো। গণ্ডগোলে নয়, মূলত লাঠি হাতে দাঁড়িয়েছেন সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য। তারা নির্দেশনা দিচ্ছেন যানজট নিরসনে। নিয়ম করে সিগন্যাল ছাড়ছে, আর গাড়িগুলো ছুটে যাচ্ছে গন্তব্যে।

মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার অলী খা মসজিদ মোড় এলাকায় দেখা গেছে এমন চিত্র।

শিক্ষার্থীদের সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজকে সাধুবাদ জানাচ্ছে স্থানীয়রা। পথচারীদের অনেকে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছবি তুলছেন, বাহবা দিচ্ছেন।

অলি খা মসজিদ পার করে একটু সামনে গেলেই চকবাজার গুলজার মোড়। সেখানেও শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কাজ করছেন। বাঁশি বাজিয়ে, হাতে লাঠি নিয়ে তারা সিগন্যালে অবস্থান করছিলেন।

মূলত কোটা আন্দোলন ঘিরে কয়েকদিনের সহিংসতায় সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ফাঁড়িতে আগুনের ঘটনায় পুলিশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক বিরাজ করছে। চট্টগ্রামে বেশিরভাগ রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়নি।

এমন পরিস্থিতিতে সারা দিন ট্রাফিক সামলেছে শিক্ষার্থীরা। তারা বলছে, বিবেকের তাড়নায় স্বেচ্ছায় সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে নেমেছেন তারা।

অলী খা মসজিদ মোড়ে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজ করা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইজা তাবাসসুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘দেশে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এখন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এখানে আসা। সকালে শুনেছি সড়কে ট্রাফিক পুলিশ নেই। তাই আমরা কাজ করতে এসেছি।’

দেশে চলমান অস্থিরতা ও লুটপাট নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সংগ্রাম ছিল বৈষম্য নিয়ে, একটা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার। গতকাল থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দুদের বসতঘরে হামলার ঘটনা হয়েছে, বিভিন্ন জায়গায় লুটপাট হয়েছে। এসব খুব জঘন্য কাজ।’

আসিফুর রহমান নামে আরেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, ‘ডিউটি করে আমাদের ছাত্র ভাইয়েরা কাজ করছে। এখন আমরা করছি। নিজেদের ইচ্ছায় আমরা এখানে এসেছি।’