ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে উপকূলজুড়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। তবে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে পটুয়াখালীর কলাপাড়াসহ বঙ্গোপসাগর বেষ্টিত এলাকায়।
রোববার (২৩ অক্টোবর) সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। তবে এখন পর্যন্ত সমুদ্রের উত্তাল বা বাতাসের গতিবেগ বৃদ্ধি পায়নি। স্থানীয়রা জানান, ২০০৭ সালের সিডরের আগের কয়েকদিনের আবহাওয়া যেভাবে ছিল ঠিক সেই আবহাওয়া বর্তমানে বিরাজ করছে।
কুয়াকাটা এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, সিডরের আগের দিন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি থমথমে অবস্থা ছিল সন্ধ্যার পরে হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়। এখন শুনছি বড় বন্যা হবে কিন্তু সাগরে ডেউ নেই, বাতাস নেই। তবে আমরা আতঙ্কে আছি।
সাগরের পাড়ে পরিবার নিয়ে থাকা পারুল বেগম বলেন, এখন পর্যন্ত তো বন্যা হওয়ার মতো কিছু দেখছি না। আর মাইকিংও হচ্ছে না। মাইকিং করলে আমার নিরাপদে চলে যাবো।
জেলা আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্যমতে, পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরও সামান্য উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত ও ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়ে প্রাথমিকভাবে দিক পরিবর্তন করে উত্তর দিকে অগ্রসর হতে পারে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্ব্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এদিকে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা চলার কারণে সব ধরনের ট্রলার ও নৌকা নিরাপদে রয়েছে। কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদেরও নিরাপদে থেকে ভ্রমণের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী জানান, উপকূলীয় চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৩-০৫ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা পরে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।