ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর-পশ্চিম উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদেরা। তাঁদের মতে, ঘূর্ণিঝড়টি কাল শনিবার মধ্যরাতের দিকে বাংলাদেশের খুলনা-বরিশাল অঞ্চলের ওপর আঘাত হানতে পারে। তবে উপকূলে আঘাত হানার আগে কিছুটা দুর্বল হয়ে যেতে পারে। ইতিমধ্যেই আজ সকাল থেকে বরিশালের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ছে। বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) থেকে তাপমাত্রাও কিছুটা কম রয়েছে।
এদিকে বরিশালে ঘুর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় জেলা দুর্যোগ ও ব্যবস্থাপনা কমিটি জরুরি সভা করেছে। খোলা হয়েছে একটি কন্ট্রোলরুম। শুক্রবার (০৮ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা এবং উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, বরিশাল জেলায় ২৩২টি সাইক্লোন শেল্টার কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনে বিভিন্ন বিদ্যালয় ভবন আমরা নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ব্যবহার করবো। ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি), রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছেন। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও রোভার স্কাউটের সদস্যরাও যেকোনো ধরনের সহায়তা করবে।তিনি আরও বলেন, সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সার্বিক সব বিষয়ে খোঁজখবর রাখছে। আমরা এরইমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ বিষয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছি।
অজিয়র রহমান বলেন, ২০০ মেট্রিকটন চাল, শুকনো খাবারসহ প্রয়োজনীয় ত্রাণসামগ্রী মজুদ আছে। আমরা ঘুর্ণিঝড়ের সতর্ক বার্তা দেখে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করবো। তবে সবার জন্য বলবো, কেউ যেন ঝুঁকি নিয়ে অনিরাপদ আশ্রয়ে না থাকেন।
সভায় জনসাধারণকে সরকারি নির্দেশনা মেনে জানমালের রক্ষায় সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার অনুরোধ জানানো হয়। একইসঙ্গে সরকারি সংশ্লিষ্ট সবকর্মকর্তাকে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের গতিবিধি লক্ষ্য রেখে সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড় বুলবুল মোকাবিলায় প্রস্তুতির জন্য যেকোনো সময় জরুরি সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি সভায় সংশ্লিষ্ট সরকারি সবকর্মকর্তার ছুটি বাতিলের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
বরিশাল জেলা প্রশাসনের খোলা কন্ট্রোলরুমের নম্বর ০১৭৪১ ১৯৬৯৩৯ ও ০৪৩ ১৬৩৮৬৩।
এদিকে, সকাল থেকে বরিশালে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সিপিপির পক্ষ থেকে নদী তীরবর্তী এলাকায় সতর্কতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
অপরদিকে নদীবন্দরে ১ নম্বর সতর্কতা সংকেত থাকায় অভ্যন্তরীণ রুটে সতর্ক হয়ে নৌযান চলচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।