শামীম আহমেদ ॥ বছরের সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ নিয়ে শংকায় রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলবাসী। ইতোমধ্যে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হয়েছে একটি ঘূর্ণাবর্ত। ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণাবর্তটি প্রবল সাইক্লোনে রূপান্তরিত হতে চলেছে।
আগামী ২/১ দিনের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে প্রথমে লঘুচাপ অতঃপর গভীর নি¤œচাপে পরিণত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে আসানি। গতিমুখ অনুযায়ী উপকূলের দিকে এগিয়ে আসলে আঘাত হানতে পারে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলে।
বরিশাল আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবারের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে ‘আসানি’ যার অর্থ ক্ষুব্ধ। ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ উত্তর-পূর্ব দিকে ভারতের উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে। নিন্মচাপে রূপ নেয়ার পর এটির গতিপথ কোন দিকে যাবে তা জানা যাবে।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ মোকাবেলায় বরিশাল বিভাগের ৪ হাজার ৯১৫টি আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রস্তত করা হয়েছে।
যারমধ্যে বরিশাল জেলায় ১ হাজার ৭১টি, পটুয়াখালীতে ৯২৫টি, ভোলায় ১১শ’ ৪টি, পিরোজপুরে ৭১২টি, বরগুনায় ৬২৯টি এবং ঝালকাঠিতে ৪৭৪টি আশ্রয়ন কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এসব আশ্রয়ন কেন্দ্রগুলোতে ২০ লাখ মানুষের পাশাপাশি কয়েক লাখ গবাদী পশুকেও স্থান দেওয়া যাবে। আশ্রয়ন কেন্দ্রে বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার ও বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এনিয়ে ইতোমধ্যে জেলা পর্যায়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের মে মাসেই ঘটে এ ধরনের ঝড়। ২০০৯ সালের ২৫ মে ধেয়ে এসেছিলো প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা’।
যার বীভৎসতায় ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছিল সুন্দরবন। ২০২০ সালে এ অঞ্চলে পুনরায় আছড়ে পড়েছিলো ‘আমফান’। সেটাও ছিলো মে মাস। ২০২১ সালের ২৬ মে হাজির হয়েছিল ‘ইয়াস’। এবার সেই মে মাসেই আসছে ‘আসানি’।
বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ জসীম উদ্দিন হায়দার বলেন, ত্রাণ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সাথে যারা জরিত এবং ইউএনও, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সংস্থাদের প্রতিনিধিদের নিয়ে ইতোমধ্যে (৭ মে) প্রস্তুতি সভা করা হয়েছে।
শুকনো খাবার ও সাইক্লোন সেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সিপিপি ভলান্টিয়ারদেরকেও প্রস্তুত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, উপকূলীয় এলাকাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে আমরা কাজ করছি।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার আমিন উল আহসান বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’ মোকাবেলায় আমরা পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছি। আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আগামী ৯ মের মধ্যে আসানি লঘুচাপে রূপ নিতে পারে।
এরপর ধীরে ধীরে এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপ হয়ে ১১ মে’র দিকে নিন্মচাপে রূপান্তরিত হতে পারে। তিনি আরও বলেন, বিভাগের ছয় জেলার ৪ হাজার আশ্রয়ন কেন্দ্র ইতোমধ্যে ব্যবহার উপযোগী করা হয়েছে।