ঘুষ নেওয়া সেই সাব রেজিস্ট্রার বরখাস্ত

:
: ৬ years ago

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সরকারি কক্ষে বসে ঘুষ গ্রহণের দায়ে সাব রেজিষ্টার এসহাক আলী মন্ডলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ছবিসহ এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন প্রকাশের পর বোরবার দুপুরে ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ রেজিস্ট্রেশন (আই জি আর) খান মো. আব্দুল মান্নান তাকে বরখাস্ত করেন।

নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিস্টার (ডিআর) সাবিকুন্নাহার সাব রেজিষ্টার এসহাক আলী মন্ডলকে সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি  নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, রোববার সকালেই সাব রেজিষ্টার এসহাক আলী মন্ডলকে আড়াইহাজার থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে রূপগঞ্জের সাব রেজিষ্টার রেজাউল করিম বকশিকে অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রদান করা হয়।

জেলা রেজিস্টার জানান, এর আগে দুপুরে ইন্সপেক্টর জেনারেল অফ রেজিস্ট্রেশন (আই জি আর) খান মো. আব্দুল মান্নান আড়াইহাজারে সরেজমিন পরিদর্শন আসেন এবং দলিল লিখকসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে মতবিনিময় করে তার ঘুষ গ্রহণের প্রাথমিক সত্যতার ব্যাপারে নিশ্চিত হন।

এদিকে দলিল লিখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ভূইয়া জানান, একজন স্থায়ী সাব রেজিষ্টার পোস্টিং দেয়ার জন্য আই জি আর এর কাছে দাবি করা হয়েছে। তিনি তাদের দাবি দ্রুত পুরণের আশ্বাস দিয়েছেন। এরপর দলিল লিখকদের কলম বিরতির স্থগিত ঘোষণা করেন।

প্রসঙ্গত, সরকারি অফিসে বসে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার এছহাক আলী মন্ডলের ঘুষ গ্রহণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে এনিয়ে ধারাবাহিত প্রতিবেদ প্রকাশ করে।

ভিডিওতে দেখা যায়, টেবিলের ওপর কম্পিউটার। রয়েছে মুঠোফোন ও ফাইলের স্তুপ। প্রতিটি ফাইলে স্বাক্ষর করার আগে টাকা গুনে ড্রয়ারে রাখেন সাব রেজিস্ট্রার। পাশ থেকে একজন ফাইল এগিয়ে দিচ্ছেন। এর মধ্যে একজন টাকা কম দেয়ায় টাকা ছুড়ে দিচ্ছেন। পরে আবার তার চাহিদা মত টাকা ড্রয়ারে রাখছেন। ড্রয়ারে টাকার অনেকগুলো নোট জমার পর নিজ হাতে তিনি প্যান্টের পকেটে গুজে রাখছেন।

এছাড়া সাব-রেজিস্ট্রার ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ করেন না এমন প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার থেকে আড়াইহাজারে দেড় শতাধিক দলিল লেখক একযোগে কর্মবিরতি পালন করে। সাব-রেজিস্ট্রারের প্রত্যাহার  এবং একজন স্থায়ী সাব রেজিস্টার পোস্টিং চেয়ে বিক্ষোভ করেন সমিতির সদস্যরা।

দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন ভূইয়া অভিযোগ করেন, বন্দর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার এছহাক আলী মন্ডলকে আড়াইহাজার উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি দুই মাস ধরে এখানে এসে প্রতিটি দলিলের জন্য মোটা অংকের টাকা ঘুষ দাবি করেন দলিল লেখকদের কাছ থেকে। তার দাবি করা ঘুষ না দিতে পারলে কারো দলিল রেজিস্ট্রি হয় না।

দলিল লেখক সাজ্জাদ পারভেজ বলেন, ব্যাংক মরগেজ চুক্তিনামা আগে কোন টাকা লাগতো না। কিন্তু সাব রেজিষ্টার এসহাক মন্ডল চুক্তিনামা সাক্ষর করতে  এখন ১০ হাজার টাকা থেকে পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ নেন। পাওয়ার, পারিবারিক বন্টন দলিলে চালান বাদে সরকারকে কোন ফি দিত হত না। কিস্তু এ সাব রেজিষ্টার এসব দলিল থেকে সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা ঘুষ নিতেন।