ব্রণ প্রায় সব বয়সের ছেলে-মেয়েদের সাধারণ সমস্যা, তবে বিশেষ করে টিনএজাররা এই সমস্যায় বেশি ভুগে থাকেন। ত্বকে ব্রণ ও ব্রণের দাগ শুধু সৌন্দর্য্যহানি করে না সেই সাথে আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়। ব্রণ হওয়ার নিশ্চিত কোন কারণ জানা যায়নি, অনেকের মতে নিয়মিত ভাবে ত্বক পরিষ্কার না করা, চকলেট কিংবা ফাস্টফুড জাতীয় খাবারের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা ও হরমোন পরিবর্তনের ফলে ব্রণ হয়ে থাকে।
দাগহীন সুন্দর ত্বকের জন্য ব্রণ সমস্যার সমাধান সবাই চাই কিন্ত আগে জানতে হবে ব্রণের সম্ভাব্য কারণ আর সেই সাথে আমাদের ত্বকের ধরণ। খুব সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে কীভাবে আমরা ব্রণ মুক্ত থাকতে পারি সে সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ডা: সন্দীপ ভাসিনের পরামর্শ জেনে নেয়া যাক।
ত্বক পরীক্ষা: ত্বকে ব্রণ হলে প্রথমে ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে থেকে পরীক্ষা করে ত্বকে ব্রণের কারণ জানতে হবে। আমরা যদি ত্বকের ধরণ এবং ব্রণের কারণগুলো না জেনে নিজেরা ঘরে যা সামনে পাই ত্বকে লাগাতে থাকি, তবে হয়তো ব্রণ দূর হওয়ার পরিবর্তে আমাদের ত্বকের আরও ক্ষতি হতে পারে।
ব্যায়াম: প্রতিদিন অন্তত কিছু শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে। ব্রণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা সঠিক ডায়েটের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এছাড়াও মিষ্টি ও শর্করা জাতীয় উচ্চক্যালরি যুক্ত খাবার কম খেতে হবে।
খাদ্য: ব্রণ দূর করার জন্য আয়রন ও ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ খাদ্য নিয়মিত আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে। সবুজ শাকসবজি ও দুগ্বজাত দ্রব্য, মাছ, কলিজা, গাজর, ব্রকলি খেতে হবে ।
প্রাকৃতিক এন্টিসেপটিক: চা গাছের নির্যাস থেকে এক ধরনের তেল তৈরি হয়। এই তেল ব্রণের জন্য এন্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যায়। প্রতিদিন রাতে ত্বক পরিষ্কার করে ব্রণের ওপর লাগিয়ে নিন।
বেকিং সোডা: আমাদের সবার রান্নাঘরেই বেকিং সোডা থাকে। তাই খুব সহজেই পেয়ে যাবেন এটি। জানেন কি? বেকিং সোডা ব্রণ সারাতে টনিকের কাজ করে। একটি বাটিতে ১ চামচ বেকিং সোডা সাথে একটু পানি মিশিয়ে পেস্ট করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। ব্রণ কমে যাবে ।
হারবাল: নিম এবং চিরতা ব্রণ ভালো করতে সাহায্য করে। ব্রণহীন ত্বক পেতে নিয়মিত নিম পাতা এবং চিরতার পেস্ট তৈরি করে ত্বক পরিষ্কার করতে হবে।
যবের গুঁড়া: যবের গুঁড়া ১ চামচ পানির সাথে মিশিয়ে পেস্ট করে সারা মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।পারিষ্কার তোয়াল দিয়ে মুছে নিন।যবের গুঁড়া ব্রণ দূর করে ও মুখ পরিষ্কার হয়।
অলিভ অয়েল: অলিভ অয়েল ত্বকের জন্য ভালো ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং ত্বক কোমল ও মসৃণ হয়। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ দূর করে।
ডিমের সাদা অংশ: ডিমের সাদা অংশ পেস্ট করে ত্বকে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। ত্বকে যদি ডিমে এলার্জির সমস্যা হয়, তাহলে এটা ব্যবহার করা যাবে না।
টক দই: টক দই ব্রণের জন্য খুব ভালো। টক দই সারা মুখে মেখে ১০ মিনিট পর ধুয়ে নিন। টক দই ব্যবহারের ফলে ত্বক হয় উজ্জ্বল ও মসৃণ।
বরফের জাদু: ব্রণের ওপর বরফ টুকরো ঘষুন। এর রয়েছে দারুণ ক্ষমতা। এটি ব্রণের আকার কমিয়ে দেয় কয়েক মুহূর্তেই। আর ব্রণ দূরও হয় দ্রুত।
পর্যাপ্ত ঘুম, প্রচুর পানি পান আর সুস্থ জীবনযাপনের মাধ্যমেই ঘরোয়া পদ্ধতিতেই আমরা পেতে পারি ব্রণ ও দাগহীন সুন্দর ত্বক।