ঘরে বসেই যেন একজন নাগরিক সিটি কর্পোরেশনের সেবা গ্রহণ করতে পারেন সে লক্ষ্যে কাজ করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি চালু করা হয়েছে ই-ট্রেড লাইসেন্স ও ই-রেভিনিউ অটোমেশস সার্ভিস।
ডিএসসিসি সূত্র মতে, ডিএসসিসি এলাকায় প্রায় এক লাখ ৮২ হাজার ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। সনাতন পদ্ধতিতে ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়া জটিল ও সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। সংশ্লিষ্ট অফিসে গিয়ে সব কাজ সম্পন্ন করার পাশাপাশি নির্দিষ্ট ব্যাংকে গিয়ে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ফি প্রদান করতে হতো। এসব সনাতনী পদ্ধতির বিড়ম্বনার কারণে রাজধানী ঢাকায় প্রায় ৫০ হাজারের অধিক ব্যবসায়ীর ট্রেড লাইসেন্স নেই। এ কারণে সরকার শত কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
তাই নাগরিক ভোগান্তি কমাতে, ট্রেড লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করার ক্ষেত্রে ঘরে বসেই ট্রেড লাইসেন্স সেবার ব্যবস্থা করে ডিএসিসি। ই-ট্রেড লাইসেন্স সেবাটি সার্বিক সহযোগিতা করেছে এটুআই প্রোগ্রাম।
অন্যদিকে হোল্ডিং ট্যাক্স দিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির বাড়িওয়ালাদের আর নগর ভবন বা আঞ্চলিক কার্যালয়ে যেতে হবে না। এখন থেকে ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে তাদের হোল্ডিং ট্যাক্স প্রদান করতে পারবেন। সে কারণে সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বিভাগের ডিজিটালাইজেশন কার্যক্রমের ই-রেভিনিউ অটোমেশন কার্যক্রম যাত্রা শুরু করেছে। ডিএসসিসি এলাকায় এক লাখ ৬৫ হাজার হোল্ডিং রয়েছে।
ই-ট্রেড লাইসেন্স সেবার ধারণাপত্র প্রস্তুতকারী ডিএসসিসির প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, এই সেবার মাধ্যমে নাগরিকরা দ্রুত ও নির্বিঘ্নে তাদের সেবা পাবেন। তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় ই-সেবা নিশ্চিত করাই এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
ই-ট্রেড লাইসেন্স
প্রকল্পটির নাম দেয়া হয়েছে ডিজিটালাইজেশন অব ট্রেড লাইসেন্স ডেলিভারি ইন ডিএসসিসি। এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৩৪ লাখ ১৯ হাজার ৫শ টাকা। সেবাটি পেতে প্রথমে www.etradelicense.dhakasouthcity.gov.bd লিঙ্কে প্রবেশ করলে নতুন নিবন্ধনের করার জন্য লগইন স্ক্রিনের নিচের হাইপারলিঙ্কে ক্লিক করতে হবে। এখানে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে নিবন্ধনের কাজ হলে মোবাইলে প্রাপ্ত পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করতে হবে। এরপর ব্যবসাসংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ও সংশ্লিষ্ট কাগজাদি অ্যাটাচমেন্ট আকারে সাবমিট করতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্স সুপারভাইজার সরেজমিনে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে অনলাইনে রিপোর্ট প্রদান করবেন।
আবেদন গৃহীত হলে ব্যবসায়ীর নিবন্ধনকৃত মোবইল নম্বরে প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করার জন্য একটি মেসেজ যাবে। পেমেন্ট গেটওয়ের যে কোনো চ্যানেলের মাধ্যমে অনলাইনে বা মোবাইলের মাধ্যমে তার প্রয়োজনীয় ফি প্রদান করা যাবে। কর-কর্মকর্তা ব্যবসায়ীর পেমেন্ট স্ট্যাটাস এবং আনুষঙ্গিক বিষয়াদি পর্যালোচনা করে ই-ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করবেন। ইস্যুকৃত ই-ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত একটি নোটিফিকেশন মেসেজ ব্যবসায়ী তার নিবন্ধনকৃত মোবাইল নম্বর পাবেন। এরপর তার অনলাইন অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ইংরেজি বা বাংলা ভার্সন ই-ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করতে পারবেন।
ই-রেভিনিউ অটোমেশন
নাগরিকবান্ধব এ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পেরেশনের রাজস্ব বিভাগের ডিজিটালাইজেশন ই-রেভিনিউ অটোমেশন কার্যক্রমটি স্থানীয় সরকার বিভাগের আরবান পাবলিক অ্যান্ড আরকে সফট লিমিটেডের কারিগরি সহায়তায় বাস্তবায়িত হয়েছে।
সেবাটি গ্রহণ করতে প্রথমে www.erevenue.dhakasouthcity.gov.bd এই লিঙ্কে প্রবেশ করলে গ্রাহকের রেজিস্ট্রেশন ফরম আসবে সেখানে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর, ই-মেইল আইডিসহ বিভিন্ন তথ্য পূরণ করতে হবে।
এরপর হোল্ডিং নম্বর সম্পর্কিত ফরম পূরণের পর কী পরিমাণ হোল্ডিং ট্যাক্স বকেয়া আছে তা জানা যাবে। পরিশোধ করতে চাইলে পরিশোধ অপশনে গিয়ে গ্রাহক তার ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য যুক্ত করলে মোবাইলে মেসেজ আসবে কার্ড থেকে তার কত টাকা হোল্ডিং ট্যাক্স বাবদ কাটা হয়েছে।