গৃহবধূকে ঘরে আটকে গরম রডের ছ্যাঁকা

:
: ১ বছর আগে

বরগুনার তালতলীতে মধ্যবয়সী (৪৮) এক গৃহবধূকে ঘরে আটকিয়ে গরম রড দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়া ও মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি, ভাসুর ও ননদের বিরুদ্ধে।

শনিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) স্বজনরা নির্যাতিত ওই গৃহবধূকে গুরুতর অবস্থায় আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

জাহানারা বেগম নামের এই গৃহবধূ জানান, তার ভাসুর সোনাকাটা ইউনিয়নের লালুপাড়া গ্রামের প্রবাসী আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ও স্ত্রী রাজিয়া তার ভাইয়ের ছেলে শাহিন চৌকিদারকে মালয়েশিয়া নেওয়ার কথা বলে ২০২১ সালের ১৬ জুলাই ৩ লাখ টাকা নেন। এরপর শাহিনকে বিদেশে না পাঠিয়ে ঘুরাতে থাকেন। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে তাদের মধ্যে ব্যাপক দ্বন্দ্ব দেখা দেয়।

এ ঘটনায় জাহানারার স্বামী বাবুল হাওলাদার বাদে পরিবারের সবাই আনোয়ার হোসেন ও তার স্ত্রী রাজিয়া বেগমের পক্ষ হয়ে জাহানারা দম্পতিকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে থাকেন। যাতে নেওয়া ৩ লাখ টাকা ফেরৎ দিতে না হয়।

শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে জাহানারা বেগম তার জা রাজিয়া বেগমের কাছে টাকা চাইতে গেলে রাজিয়া, শাশুড়ি সেতারা বেগম, ননদ জেসমিন বেগম ও ভাশুর আবুল হোসেন তাকে ঘরে আটকে ব্যাপক মারধর করে। এক পর্যায়ে রড পুড়িয়ে গরম করে মধ্যযুগীয় কায়দায় ডান গালে, পিঠে, দুই হাতে ও বাম পায়ে ছ্যাঁকা দিয়ে গুরুতর জখম করে। নির্যাতনের সময় জাহানারা বেগম ডাক চিৎকার দিলেও ভয়ে কেউ এগিয়ে আসেনি।

স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে শনিবার জাহানারা বেগমের ভাই হাবিব চৌকিদার বোনকে উদ্ধার করে মুমুর্ষু অবস্থায় তাকে আমতলী হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন।

হাবিব চৌকিদার অভিযোগ করে বলেন, আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী রাজিয়া বেগম আমার ছেলেকে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য ৩ লাখ টাকা নেয়। ২ বছর অতিবাহিত হলেও আমার ছেলেকে বিদেশেও পাঠায়নি, টাকাও ফেরৎ দেয়নি। টাকা চাওয়ার অপরাধে আমার বোন জাহানারাকে বেদম মারধর করে রড পুরে ছ্যাকা দিয়ে গুরুতর আহত করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।

তবে আনোয়ার হোসেন হাওলাদার মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওরা আমাদের কাছে কোন টাকা পয়সা পাবে না। এছাড়া জাহানারা বেগমকে আমরা কোন মারধর করিনি। আমাদেরকে হয়রানি করার জন্যই এসব মিথ্যা অভিযোগ।

আমতলী হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. লুনা বিনতে হক বলেন, জাহানারা বেগমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে লোহা জাতীয় কিছু দিয়ে ছ্যাঁকা দেওয়ার অনেক দাগ রয়েছে। এছাড়াও লাঠি দিয়ে পিটানোর আঘাতও রয়েছে। তার সুস্থ হতে অনেক সময় লাগবে।

তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।