গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণ ও হত্যা: রংপুরে সাবেক এএসআই ও তার স্ত্রীর যাবজ্জীবন

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago

রংপুরে গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় পুলিশের সাবেক এএসআই ও তার স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রবিবার দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জাবিদ হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- রংপুর মহানগরীর তালুক রঘু গ্রামের বাসিন্দা রংপুর কোতোয়ালি থানার সাবেক এএসআই আলতাফ হোসেন (৬৫) ও তার স্ত্রী ছালেহা খাতুন (৫৫)। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খন্দকার রফিক হাছনাইন জানান, যাবজ্জীবনের পাশাপাশি আসামিদের এক লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অপহরণের দায়ে ১৪ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আব্দুর রশীদ চৌধুরী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, তালুক রঘু গ্রামের মজিবর রহমানের মেয়ে মঞ্জিলা বেগম রংপুর কোতোয়ালি থানার এএসআই আলতাফ হোসেনের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করত। ২০০৩ সালের ২৪ মে রাতে মঞ্জিলাকে বাড়িতে ঘুমানোর কথা বলে ডেকে নিয়ে যান ছালেহা। এরপর তিনি মঞ্জিলাকে আলতাফের ঘরে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। পরে আলতাফ মঞ্জিলা জোরপূর্বক ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ বাড়ির পাশে ধান ক্ষেতে ফেলে রেখে দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ মঞ্জিলার লাশ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় মঞ্জিলার মা রাবেয়া বেগম বাদী হয়ে ২৬ মে অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। মামলার এজাহারে আলতাফ ও তার স্ত্রী ছালেহাকে আসামি করা হয়। গ্রেফতারের পর এএসআই আলতাফকে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ প্রশাসন। কিছুদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হন তারা। যুক্তিতর্কের দিন বিচারক তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তদন্ত শেষে ওই বছরের ৫ সেপ্টেম্বর আলতাফ ও ছালেহার বিরুদ্ধে পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দিলে এ মামলার বিচার কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ ১৫ বছর পর এ মামলায় ১৪জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে রবিবার বিচারক আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেন।
এদিকে মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে নিহত মঞ্জিলার বাবা মজিবর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে বিচারের আশায় আদালতের বারান্দায় ঘুরেছি। গরীব হওয়ায় টাকা-পয়সা খরচ করতে পারিনি। তিনি আসামিদের ফাঁসির দাবি জানান।