চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় মিলে গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষায় যেতে চায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)। এর আয়োজক হিসেবে থাকতে চায় বুয়েট। প্রিলিমিনারি শেষে পৃথক লিখিত পরীক্ষা নিতে চায় বুয়েট। তবে বুয়েটের প্রস্তাবে রাজি নয় অপর তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয় তিনটির কর্তৃপক্ষ বলছে, গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা সম-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে করতে হবে। অর্থাৎ, একেক বছর একেক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার দায়িত্বে থাকবে। এছাড়া সবার সমান অংশগ্রহণে যে কেন্দ্রীয় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটি থাকবে, সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রস্তাবনা দিয়ে ব্যবস্থা নিতে ইউজিসির পাশাপাশি বুয়েটকেও চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) রেজিস্ট্রার জি এম শহিদুল আলম বলেন, বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার সঙ্গে কুয়েট একমত না। তবে আমাদের তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে আগে থেকে বিআইটির অধীনে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হতো। সে বিষয়ে মঙ্গলবার তিন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সভা আছে। সেখানে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত আসবে। এক্ষেত্রে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় আসলে স্বাগত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেন বলেন, আমরা চাই সম-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরীক্ষা হোক। পর্যায়ক্রমে সব বিশ্ববিদ্যালয় পরীক্ষা আয়োজন করবে, সিদ্ধান্ত হবে এ সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় কমিটিতে। এক্ষেত্রে বুয়েটও আসবে বলে আশা করছি। তবে তারা না আসলে আমরা তিন বিশ্ববিদ্যালয় মিলে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা নেবো। রাষ্ট্রপতি, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে। আমরা এর বাইরে যেতে পারি না।
তিনি বলেন, আমরা গুচ্ছ পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেক্ষেত্রে চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় মিলে সম-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে পরীক্ষা হবে বলে আশা করছি। সেজন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাশাপাশি বুয়েটকেও চিঠি দিয়েছি। এছাড়া ইউজিসিকে চিঠি দিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
জানা যায়, বুয়েটের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে নেওয়া প্রস্তাবনা অনুযায়ী, প্রথম ধাপে চারটি প্রকৌশলী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসিকিউ পরীক্ষা হবে। এতে উত্তীর্ণ ভর্তিচ্ছুরা বুয়েট ক্যাম্পাসে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেবে। এতে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা চার প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে। এ প্রক্রিয়ার নেতৃত্বে থাকতে চায় বুয়েট।
এ বিষয়ে বুয়েটের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. ফোরকান উদ্দিন বলেন, আমাদের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন সব দায়িত্ব ভর্তি পরীক্ষা কমিটির। তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কী ভাবছে- এর ওপর নির্ভর করছে। এ বিষয়ে ভর্তি পরীক্ষা কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে।
এর আগে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (বিআইটি) অধীনে আগে কুয়েট, চুয়েট ও রুয়েটে একযোগে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হতো। সে সময় যথাক্রমে বিআইটি খুলনা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহী নামে পরিচিত ছিল। এখন গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা প্রসঙ্গ আসায় এবং বুয়েটের প্রস্তাবে রাজি না হতে পারায় তিন বিশ্ববিদ্যালয় মিলে আবারো সে ধরনের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তাভাবনা করছে।