গুগলের নতুন ঘোষণায় মাথায় হাত ইউটিউবারদের

লেখক:
প্রকাশ: ৪ years ago

অনলাইনে আয়ের অন্যতম বড় মাধ্যম ইউটিউব। যত দিন যাচ্ছে, কনটেন্ট ক্রিয়েটররা আয়ের জন্য তত বেশি ইউটিউবের দিকে ঝুঁকছেন। কিন্তু এবার গুগলের নতুন এক ঘোষণায়, মাথায় হাত পড়েছে ইউটিউবারদের।

ইউটিউবারদের জন্য গুগল নতুন যে নিয়ম ঘোষণা করেছে তা মোটেও সুখবর নয়। নতুন নিয়ম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ব্যতীত বাকি সকল দেশের ইউটিউবাররা বেশ চিন্তায় পড়েছেন। গুগলের নতুন নিয়ম অনুসারে, ইউটিউবারদের এবার ‘ইউএস’ ট্যাক্স দিতে হবে। একমাত্র যুক্তরাষ্ট্রের ইউটিউবারদের অতিরিক্ত এই ট্যাক্সের বোঝা নিতে হবে না। বাকি সকল দেশের ইউটিউবারদের আয় থেকে ‘ইউএস’ ট্যাক্স কেটে নেবে গুগল।

 

চলতি বছরের জুন মাস থেকে চালু হবে এই নতুন নিয়ম। ইতিমধ্যেই ইউটিউবারদের মেইল করে বিষয়টি জানাতে শুরু করেছে গুগল। মেইলের বার্তায় বলা হয়েছে, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অ্যাডসেন্স-এ নিজেদের ট্যাক্স সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে হবে। এর জন্য সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩১ মে-র মধ্যে এই তথ্য জমা দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ট্যাক্স সংক্রান্ত তথ্য অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে জমা না করলে সেক্ষেত্রে ইউটিউবারের মোট মাসিক আয়ের ২৫ শতাংশ অর্থ কেটে নেবে গুগল। যুক্তরাষ্ট্র ব্যতীত, বিশ্বের বাকি সব দেশেই চালু হবে এই নিয়ম।

কিছুটা হলেও সান্ত্বনার কথা হলো এই যে, শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে উপার্জিত আয়ের ক্ষেত্রে ট্যাক্স পরিশোধ করতে হবে। অর্থাৎ একজন ইউটিউবার নিজের মাসিক আয়ের যেটুকু অংশ তিনি আমেরিকার দর্শকদের থেকে উপার্জন করেছেন তার নির্দিষ্ট অংশ ট্যাক্স হিসেবে দিতে হবে। শুধু বিজ্ঞাপন নয়, ইউটিউব প্রিমিয়াম, সুপার স্টিকার, সুপার চ্যাট এবং চ্যানেল মেম্বারশিপ- এসব ক্ষেত্রেও কাটা হবে ট্যাক্স। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া অন্যান্য দেশের দর্শকদের থেকে একজন ইউটিউবার যে আর্থিক উপার্জন করবেন সেক্ষেত্রে কোনো ট্যাক্স দিতে হবে না।

ট্যাক্সের পরিমাণ দেশ ভেদে আলাদা হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্স সংক্রান্ত যে চুক্তি রয়েছে তার উপরে ট্যাক্সের পরিমাণ নির্ভর করবে। যেমন ধরা যাক, আপনার দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্স সংক্রান্ত চুক্তি অনুযায়ী ধার্য ট্যাক্সের পরিমাণ আয়ের শতকরা ১৫ ভাগ। তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকদের কাছ থেকে মাসে আপনার ১০০ ডলার আয় হয়ে থাকলে, তার ১৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫ ডলার গুগলের খাতায় জমা করতে হবে।

 

তবে কোনো দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যাক্স লেনেদেনের চুক্তি না থাকলে, সেদেশের ইউটিউবারদের যুক্তরাষ্ট্রের দর্শকদের কাছ থেকে প্রাপ্ত মাসিক আয়ের ৩০ শতাংশ ট্যাক্স হিসেবে কেটে নেওয়া হবে। অর্থাৎ সেক্ষেত্রে ১০০ মার্কিন ডলারের মধ্যে থেকে ৩০ ডলার ইউটিউবারের অ্যাকাউন্ট থেকে বেরিয়ে যাবে।

গুগলের নতুন এই ট্যাক্স আরোপের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন অনেক কনটেন্ট ক্রিয়েটর। ক্রিয়েটররা বলছেন, ইউটিউব আগে থেকেই আয়ের একটি অংশ নিচ্ছে, তাই কেন আবার আলাদাভাবে ট্যাক্স দিতে হবে? গুগলের এই সিদ্ধান্ত ক্ষুদ্র নির্মাতাদের ক্ষতি করতে পারে বলে তাদের মতামত।