বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইংল্যান্ডের ব্রিস্টলে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকারীরা সপ্তদশ শতকের দাস ব্যবসায়ী এডওয়ার্ড কোলস্টনের মূর্তি নামিয়ে ফেলে। এর পরপরই মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি অপসারণে পিটিশন দাখিলের বিষয়টি সামনে আসে। এর আগে ২০১৯ সালে ম্যানচেস্টারের কিছু শিক্ষার্থী একই দাবি তোলেন। সেখানেও গান্ধীর বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী মনোভাবের অভিযোগ তোলা হয়।
২০১৮ সালের ডিসেম্বরে একই অভিযোগ তুলে হওয়া আন্দোলনের মুখে ঘানা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে থাকা মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি অপসারণ করা হয়। এবার লেস্টারের মূর্তিটি অপসারণের আন্দোলন চলছে।
লেস্টার ইস্টের মন্ত্রী ক্লডিয়া উইবি এই আবেদনকে ‘বিভ্রান্তি’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এই আবেদন ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকে পথচ্যুত করবে। মার্টিন লুথার কিংয়ের মতো করেই একটি আন্দোলনের জন্ম দিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী। ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার যেমন তেমনি তার অহিংস আন্দোলনের পথ পরিবর্তনের এক অনন্য শক্তি।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক ফয়সাল দেবজি বলেন, মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি অপসারণ নিয়ে বিতর্ক অবান্তর। অন্য অনেকের মতো তারও ভুল থাকতে পারে। তাই বলে তাকে অন্য দাস ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলাটা বাড়াবাড়ি হয়ে যায়।
তিনি আরও বলেন, মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি এই অঞ্চলে থাকা গুজরাটিদের প্রতিনিধিত্ব করছে। গান্ধী নিজে গুজরাটের মানুষ ছিলেন। এখানকার গুজরাটি জনগোষ্ঠীর একটি বড় অংশ স্বৈরশাসক ইদি আমিনের সময় উগান্ডা থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে এখানে এসেছিলেন।
ঊনবিংশ শতকের শেষের দিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকালে মহাত্মা গান্ধী কৃষ্ণাঙ্গদের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। আর এই বিষয় নিয়েই তার বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের হাতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির নিহতের পর ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ নামে বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে ব্রিটেনেও। এ হত্যাকাণ্ডের জেরে প্রায় ২০ দিন ধরে বিক্ষোভ চলছে যুক্তরাষ্ট্র। দাবি উঠেছে বর্ণবাদ প্রতিরোধের। এরই ধারাবাহিকতায় মহাত্মা গান্ধীর মূর্তি অপসারণের ফেলার দাবি উঠেছে।