গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে কোনো অজুহাত শুনতে চান না প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কে প্রার্থী- সেটি বিবেচনা না করে নৌকা মার্কার পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য ওই এলাকার মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীদের বিভেদ ভুলে একসঙ্গে মাঠে নামার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
সোমবার তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে এসব তথ্য জানা গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেখানকার প্রার্থীকে জয়ী করেছেন। একইভাবে আসন্ন গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দলের প্রার্থীকে জয়ী করতে হবে। এ জন্য সেখানকার নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকলে জয় সুনিশ্চিত।
সূত্র জানায়, অনির্ধারিত আলোচনায় সম্প্রতি খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ায় অভিনন্দন জানানো হয়। একইভাবে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে দলের প্রার্থীকে জয়ী করার আহ্বান জানানো হয়।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ছিল। জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার করা হয়েছে। সেখানে মাত্র তিনটি কেন্দ্রে ঝামেলা হয়েছিল। নির্বাচন কমিশন সেই কেন্দ্রগুলো স্থগিত রেখেছে। কিন্তু বিএনপি যেভাবে অভিযোগ করছে, সেটি বেশি বাড়াবাড়ি করছে। খুলনা সিটিতে সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। সুষ্ঠু না হলে বিএনপি প্রার্থী এত ভোট পেল কীভাবে!
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, খুলনায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের ইমেজ ভালো ছিল। দলের নেতাকর্মীরাও প্রার্থীকে জয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করেছে। এ কারণে খুলনার ফলাফল আওয়ামী লীগের অনুকূলে এসেছে। গাজীপুরেও একইভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য সংশ্নিষ্ট নেতৃবৃন্দকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
গাজীপুরের বাসিন্দা মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক, নারী ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির উদ্দেশে শেখ হাসিনা আরও বলেন, এই নির্বাচন নিয়ে যেন কোনো ধরনের ঝামেলা না হয়। ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রার্থীকে জয়ী করতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে- নৌকা আওয়ামী লীগের প্রতীক। নৌকা প্রতীককে জয়ী করতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আগামী ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম।
টঙ্গীর সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল যেন তার কর্মী বাহিনী নিয়ে কাজ করেন, সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ৯১-৯৬ পর্যন্ত বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছিল; তাদের নেতাকর্মীদের ধরে জেলে পুরেছিল। এ সম্পর্কে জাতীয় পার্টি কথা বলছে না কেন? সেই নির্যাতনের চিত্র দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদেরও আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।