গণহত্যা বন্ধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে হবে : রেজাউল করীম

লেখক:
প্রকাশ: ৭ years ago
গণহত্যা বন্ধে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে হবে : পীর চরমোনাই

মিয়ানমারে গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, শিশু হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ ও আগুনে পুড়িয়ে মারার মতো বর্বরতার মাধ্যমে জাতিগত নিধনের প্রতিবাদে সামরিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর চরমোনাই। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান ও পুনর্বাসন এবং মিয়ানমার সামরিক জান্তার বিচারের দাবিতে গতকাল ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাওপূর্ব বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

এ ছাড়া ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকাস্থ জাতিসংঘ দূতাবাস অভিমুখে গণমিছিল ও স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে গণহত্যা ও বর্বরতা বন্ধ না হলে প্রয়োজনে মিয়ানমার অভিমুখে লংমার্চসহ আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব। ’ গতকাল সকাল ১০টার দিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ বায়তুল মোকাররম থেকে বিশাল মিছিল ঢাকাস্থ মিয়ানমার দূতাবাস ঘেরাওয়ের লক্ষ্যে রওনা দিয়ে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল রেস্তোরাঁর সামনে পৌঁছলে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে মিছিল নিয়ে শান্তিনগর পৌঁছলে কাঁটাতারের ব্যারিকেড দিয়ে মিছিলের গতি রোধ করে পুলিশ। এ সময় কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এখান থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মিয়ানমার দূতাবাসে স্মারকলিপি পেশ করে।

দূতাবাসের প্রটোকল অফিসার স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। ইসলামী আন্দোলনের এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আশপাশের পুরো এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পীর চরমোনাই সমাবেশে বলেন, ‘মুসলিম হত্যাকারী মিয়ানমারের সামরিক জান্তাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দিয়ে বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। ’ তিনি জাতিসংঘকে কঠোর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে সু চি সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক অবরোধের অংশ হিসেবে মিয়ানমারের সব পণ্য বর্জন করতে হবে। মুসলিম বিশ্বকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। মিয়ানমার জান্তা রাখাইন রাজ্যে গণহত্যার মাধ্যমে রাখাইন রাজ্যকে মুসলিমশূন্য করার খেলায় মেতে উঠেছে। বর্মি জান্তা এবং অং সান সু চি বিশ্বসন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।

রাখাইনের ইতিহাসের ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ ও নির্মমতা এবং মানবতা ভূলুণ্ঠিত হলেও জাতিসংঘ ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো এ ব্যাপারে কার্যকর ভূমিকা রাখছে না। জাতিসংঘের এ ভূমিকায় মুসলিম জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার অনিবার্যতা আরও জোরালো হচ্ছে। ’ তিনি বলেন, ‘সময় এসেছে আরাকান দখল করে বাংলাদেশের পতাকা বদলের। ’ তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য বিভিন্ন দেশ ও সংস্থা থেকে আসা ত্রাণ সুষ্ঠুভাবে বিতরণের দাবি জানিয়ে বলেন, ‘ত্রাণ বিতরণ নিয়ে যেন কোনো দুর্নীতি না হয়। ’ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, মুফতি সৈয়দ ফয়জুল করীম, অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম-মহাসচিব অধ্যাপক এ টি এম হেমায়েত উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, অধ্যক্ষ শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, শায়খুল হাদিস মকবুল হোসাইন প্রমুখ।