ঢাকার আশুলিয়ায় স্বামীকে আটকে রেখে পোশাককর্মী স্ত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় ধর্ষণের শিকার ওই নারীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
গত রোববার ঘটনার রাতে দুজন ও আজ মঙ্গলবার ভোররাতে চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকার জাহিদুল ইসলাম (২৩), আজাদ হোসেন (২৫) ও রানা সরকার (২৯), কোনাপাড়া এলাকার রবিউল শেখ (২১) ও রুবেল (২৩) এবং ঘোষবাগ এলাকার সাগর হোসেন (২৫)। এ ঘটনায় রজব নামের একজন পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গত রোববার গভীর রাতে একই এলাকার নাছির নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ভুক্তভোগী ওই নারী ও তাঁর স্বামীকে একটি ঘরে আটক অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ।
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফজিকুল ইসলামের ভাষ্যমতে, গত রোববার সন্ধ্যায় নরসিংহপুর সোনা মিয়া মার্কেট এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে পোশাককর্মী স্ত্রীকে নিয়ে বেড়াতে যান তাঁর স্বামী। এ সময় ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য তাহের মৃধার ম্যানেজার রজব ও তাঁর সঙ্গী রবিউলসহ সাতজন ওই দম্পতিকে আটকে তারা স্বামী-স্ত্রী কি না তা জানতে চান। পরে সোনা মিয়া মার্কেট এলাকার নাছিরের বাড়িতে স্বামী ও স্ত্রীকে পৃথক কক্ষে আটকে রাখে। এ সময় রজবসহ তাঁর সঙ্গীরা গভীর রাত পর্যন্ত ওই নারীকে একটি কক্ষে আটকে রেখে ধর্ষণ করেন। পরে ফোন করে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে ওই দম্পতির মুক্তিপণ হিসেবে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন তাঁরা।
এসআই জানান, এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে আশুলিয়া থানায় অভিযোগ করা হলে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার শর্তে ফাঁদ পাতে পুলিশ। পরে গভীর রাতে সোনা মিয়া মার্কেট এলাকায় রবিউল ও রুবেল মুক্তিপণের টাকা নিতে এলে তাঁদের হাতেনাতে আটক করা হয়।
এসআই ফজিকুল ইসলাম জানান, পরে আটকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার ভোররাতে সোনা মিয়া মার্কেটসংলগ্ন ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য তাহের মৃধার কার্যালয় থেকে এ ঘটনায় জড়িত আরো চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা নিজেদের ইয়ারপুর ইউপির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচিত সদস্য তাহের মৃধার অনুসারী বলে দাবি করেছেন। এ ঘটনায় থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইউপি সদস্য তাহের মৃধা এলাকায় ধর্ষণ, চুরি, অবৈধ গ্যাস সংযোগ প্রদানসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তাঁর একটি সন্ত্রাসী বাহিনীও রয়েছে, যাদের ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে থাকেন তিনি।
গণধর্ষণের ঘটনায় তাঁর লোকজন জড়িত রয়েছে কি না জানতে চাইলে ইউপি সদস্য তাহের মৃধা বলেন, ‘ভাই নিউজ কইরেন না। বিষয়টি আমি দেখব।