খুলনায় একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির ক্ষেত্রে ভাল কলেজগুলোতে আসন সংকট দুশ্চিন্তায় ফেলেছে অভিভাবকদের। খুলনার একাদশে ভর্তির জন্য সরকারিগুলোই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের প্রথম পছন্দ। কিন্তু যে পরিমাণ শিক্ষার্থী এসএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে, এসব কলেজে তার ১০ শতাংশ আসনও নেই।
এ অবস্থায় খুলনার বেসরকারি কলেজগুলোর মান্নোয়নের দিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। কারণ বিগত দিনে আসন সংকট মেটাতে অনার্স শ্রেণীর সরকারি বিএল ও কমার্স কলেজে একাদশ ফিরিয়ে আনলেও কমার্স কলেজের ফলাফল আশানুরূপ হয়নি। এজন্য খুলনার মধ্যকার বেশিরকারী কলেজগুলো ভালো ফলাফলের মাধ্যমে আসন সংকট পূরণে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন তারা।
এ ক্ষেত্রে নতুন বেসরকারি কলেজ হিসেনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে জেলা প্রশাসন পরিচালত খুলনা কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ। কলেজটি গতবছর প্রথম অংশ নিয়ে ২৯ শিক্ষার্থীর সবাই উত্তীর্ণ হয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ জন। এর মধ্যে ৩ জন শিক্ষার্থী খুলনা ও রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং দুই জন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। অথচ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি কলেজে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল শিক্ষার্থীরা সেখানে ভর্তি হয়েছিলো। কিন্তু শিক্ষকদের নিবিড় পরিচর্যায় এসএসসির তুলনায় দ্বিগুন ভাল ফলাফল করেছে তারা।
যশোর বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবছর খুলনা জেলার ৩৮৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ২৭ হাজার ২১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে ২৫ হাজার ৬৭১ জন। এর মধ্যে খুলনার শীর্ষ ১৫টি কলেজে জিপিএ-৫ পেয়েছে প্রায় দুই হাজার শিক্ষার্থী। জিপিএ-৪ পেয়েছে প্রায় ৪ হাজার শিক্ষার্থী।
অথচ শিক্ষার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা খুলনার সরকারি সিটি কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি সুন্দরবন কলেজ, বিএল কলেজে মোট আসন ৩ হাজারের কম। অনলাইনে আবেদনের সময় দেখা যায়, শুধু সিটি কলেজের ৯০০ আসনের বিপরীতে আবেদন কয়েক হাজার। এর মধ্যে অনলাইনে বিবেচিতরাই কলেজটিতে ভর্তি হতে পারে। বাকিরা এক রকম হতাশ হয়। পরে তারা বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হয়। আবার একটা অংশ ৪ মাস পরে কলেজ পরিবর্তনের চেষ্টা করে।
যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর আবুল বাশার মোল্লা পূর্বাঞ্চলকে বলেন, এর থেকে উত্তোরনের উপায় বেসরকারি কলেজগুলোকেও ভাল ফলাফল করতে হবে। বেসরকারি কলেজগুলো ভাল ফলাফল বা শিক্ষা পদ্ধতি পরিবর্তন করলে খারাপ শিক্ষার্থী দিয়েও ভাল ফলাফল করা সম্ভব।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ছিলো সবচেয়ে দুর্বল শিক্ষার্থী। কিন্তু কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ভাল ফলাফলের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলো। এই কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট ব্যাচ পড়তে হয়নি। কলেজে নিয়মিত ক্লাস এবং কলেজের শিক্ষকরাই দুর্বল শিক্ষকদের অধিকতর ক্লাস নিয়েছে। এর মাধ্যমে দুর্বল শিক্ষার্থীরাও ভাল ফলাফল করেছে। কলেজটির এই ধারা অব্যাহত রয়েছে। ফলে আগামীতেও এই কলেজের শিক্ষার্থীরা ভাল ফলাফল করবে।
উচ্চ মাধ্যমিকের এক কলেজের অধ্যক্ষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, নামি-দামি কলেজগুলোতে খোঁজ নিলে দেখা যাবে-সেখানে নিয়মিত ক্লাস হয় না। শিক্ষার্থীরা সারাদিনই বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে ব্যাচ নিয়ে ব্যস্ত থাকে। মেধাবী শিক্ষার্থী হওয়ায় তারা উচ্চ মাধ্যমিকেও ভাল ফলাফল করে। নাম হয় কলেজের।
তিনি বলেন, পক্ষান্তরে ভাল মানের বেসরকারি কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয়। শিক্ষকরাও আন্তরিক। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনার অভাবে এসব কলেজের ছাত্ররা গড়পড়তা ফলাফল করে। এসব কলেজগুলো সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালালে ফলাফলের দিক থেকেও তারা অনেক এগিয়ে যাবে। এ অবস্থায় একাদশে ভর্তির ক্ষেত্রে নামি কলেজের পেছনে না ছুটে যেসব কলেজে নিয়মিত ক্লাস হয় এবং শিক্ষকরা আন্তরিক-ওই সব কলেজে খোঁজ নিয়ে সন্তানদের ভর্তি করার পরামর্শ দেন তিনি।
© স্বত্ব আর্থটাইমস্ ২৪.কম
প্রকাশক ও সম্পাদক: মোঃ জাকারিয়া আলম (দিপু)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ:বরিশাল-৮২০০।
আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:::
নিউজ মেইল:::
earthtimes24@gmail.com(নিউজ)
news@earthtimes24.com(নিউজ)
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
২০১৭ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত earthtimes24.com