খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে অত্যন্ত সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিকে এই নির্বাচনের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিতে হবে। সামনে তাদের জন্য আরও বড় বড় পরাজয় অপেক্ষা করছে।
মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষে গণনা চলাকালে রাত সাড়ে ৮টায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেক এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সে সময় পর্যন্ত পাওয়া সিংহভাগ ভোটকেন্দ্রের ফলাফলে ক্ষমতাসীন দল মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী নজরুল ইসলাম মঞ্জুর তুলনায় অনেক ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অপপ্রচার মিথ্যা বলে প্রমাণ হয়েছে।
এর আগে দুপুরে ভোটগ্রহণ চলাকালে একই স্থানে আরেক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, খুলনা সিটি নির্বাচন উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সব ভোটকেন্দ্রে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ভোটাররা সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট দিচ্ছেন। ভোটের যে গতিপ্রকৃতি, তা দেখে মনে হয়- বিএনপি তাদের মেয়রপ্রার্থীর পরাজয় অবশ্যম্ভাবী জেনে এবং সেই পরাজয়কে ঢাকার জন্য এখনই মিথ্যাচার করছে।
মঙ্গলবার খুলনায় ভোট শুরুর আড়াই ঘণ্টার মাথায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ৪০টি কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছিলেন।
এর জবাবে নানক বলেন, নয়াপল্টনের স্থায়ী বাসিন্দা রিজভী। আজ সকাল থেকেই এবং তার আগে থেকেই একই কায়দায় তিনি এ ভোটগ্রহণের ব্যাপারে বিভিন্ন প্রশ্ন তুলছেন। খুলনার অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে গণমাধ্যমের সামনে নানা গুজব রটাচ্ছেন।
তিনি বলেন, যেখানে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনের কার্যক্রম চলছে, সেখানে শুরু থেকেই বিএনপি মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তেও তারা সেটি অক্ষুণ্ণ রেখেছে। এটা তাদের জন্মগত অভ্যাস। তবে তাদের এই অপচেষ্টা জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে বলেই আশা করছে আওয়ামী লীগ। একদিকে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে ভুরি-ভুরি অভিযোগ আনা, অন্যদিক নির্বাচনে অংশগ্রহণ তাদের স্ববিরোধী কাজ।
নানক আরও বলেন, খুলনার জনগণ যে স্বাধীন ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন, গণমাধ্যমই তার সবচেয়ে বড় সাক্ষী। সব গণমাধ্যম বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সার্বিক পরিস্থিতি সরাসরি সম্প্রচার করছে। দিনশেষে খুলনার জনগণ মেয়র পদে নৌকা মার্কায় তালুকদার আবদুল খালেককে বিপুল ভোটে জয়ী করবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের এই নেতা।
সকাল থেকে খুলনা সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতারা ধানমণ্ডি কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। খুলনার নেতাদের কাছ থেকে ভোটগ্রহণের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেন তারা। একই সঙ্গে খুলনার নেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাৎক্ষণিকভাবে নানা নির্দেশনাও পাঠান তারা।
দিনভর সেখানে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে আবদুর রহমান, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, অসীম কুমার উকিল, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম আমিন প্রমুখ।