খুলনায় ১৭ বছরের যুবক এখন যুবতী!

লেখক:
প্রকাশ: ২ years ago

খুলনায় ১৭ বছরের এক যুবক এখন যুবতীতে পরিণত হয়েছেন। জটিল এক সার্জারির মাধ্যমে তাকে যুবক থেকে যুবতীতে পরিণত করা হয়। তিনি সুস্থ রয়েছেন। শুক্রবার (১২ মে) নগরীর বেসরকারি ক্লিনিকে সার্জারি করেন খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইউরোলোজিস্ট এন্ড এন্ড্রোলজিস্ট ডা. নিরুপম মন্ডল। খুলনায় এ ধরনের সার্জারি এই প্রথম বলে দাবি চিকিৎসকের।

খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইউরোলোজিস্ট এন্ড এন্ড্রোলজিস্ট ডা. নিরুপম মন্ডল শনিবার (১৩ মে) বিকেলে বলেন, ১৭ বছরের একজন যুবককে অপারেশন করে নারীতে রূপান্তর করা হয়েছে। কেননা তিনি জীনগতভাবে পুরুষ। কিন্তু বাইরে নারী। একজন নারীর যেসব বৈশিষ্ট রয়েছে তা সবই রয়েছে তার। তার দুটি ব্রেস্ট আছে। তার বড় বড় চুল আছে। কণ্ঠস্বর নারীর। তার চলন-বলন, শরীরের গঠন অঙ্গভঙ্গী সবই নারীর। কিন্তু তার ভিতরটা পুরুষের মতো। পুরুষের অন্ডকোষ যেমন দ্বিখন্ডিত করলে যেমন হয় তেমন রয়েছে। কিন্তু সেটা বাইরে নয় ভিতরে রয়েছে। পুরুষাঙ্গ রয়েছে। তার মাসিকের রাস্তা ছিল না। তার শরীরে ডিম্বাশয় ও জরায়ু থাকার কথা ছিল, কিন্তু নেই। ভিতরে ভিতরে সে একজন পুরুষ, বাইরে নারী। সামাজিকভাবে নারী হিসেবে বড় হয়েছে। ১৭ বছর বয়স হয়ে গেছে। এখন সে ও তার অভিভাবকদের ইচ্ছায় তাকে নারীতে রূপান্তরিত করা হয়েছে। যা খুবই কষ্টসাধ্য।

 

তিনি বলেন, ‘সাড়ে ৪ ঘণ্টা একটানা অপারেশন করা লেগেছে। প্রথমে আমরা তার পেনিস কেটে ফেলেছি। তাকে মাসিকের রাস্তা তৈরি করে দিয়েছি। পেটের মধ্যে যে দুটি টেস্টিস ছিল তা অপারেশন করে অপসারণ করেছি। আশা করি এখন একজন নারীর জীবন যাপন করতে পারবে। এরপর তাকে আমরা হরমন রিপলেসমেন্ট দেব। যাতে সে একজন কোমলীয় নারীতে পরিণত হবে। সে একজন নারীর যৌন জীবন পালন করতে পারবে, কিন্তু তার বাচ্চা হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভিক্টোরিয়া নার্সিং হোমে শুক্রবার (১২ মে) এ অপারেশন করা হয়েছে। আমার সঙ্গে অধ্যাপক ডা. সামসুন নাহার লাকি, প্রফেসর ডা. দিলীপ কুন্ডসহ কয়েকজন সহযোগী ছিলেন।’

দক্ষিণাঞ্চলে এ অপারেশন এটাই প্রথম উল্লেখ করে ডা. নিরুপম মন্ডল বলেন, এ ধরণের অস্ত্রোপচারে প্রায় ৩ লাখ টাকা খরচ হয়।

 

ছেলে থেকে মেয়েতে রূপান্তরিত হওয়া রোগীর অভিভাবকরা বলেন, ‘সে ছোট বেলা থেকেই মেয়েদের সঙ্গে মিশত। সবাই তাকে মেয়ে হিসেবে চেনে। আমরা চেয়েছিলাম আমাদের মেয়েটা সমাজে মেয়ে হিসেবে পরিচিত হোক, সংসার করুক। তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পারিবারিকভাবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’