বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষে আর্থিক খাতে ব্যবহৃত সিস্টেমগুলো পরিচালনায় তথ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চ গতির ইন্টারনেট ও ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা বাড়ছে। চাহিদানুযায়ী সর্বোৎকৃষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার, ব্যয় সাশ্রয়, যেকোনও সময় যেকোনও স্থান হতে সিস্টেমে প্রবেশের সুযোগ, সিস্টেম ব্যবহারে নিরবচ্ছিন্নতা এবং উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে ক্লাউড সেবা গ্রহণের হারও প্রতিনিয়ত বাড়ছে। তবে, ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি ইন্টারনেট নির্ভর হওয়ায় এতে সাইবার আক্রমণসহ তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে। আর এমন পরিস্থিতিতে ক্লাউড কম্পিউটিং নীতিমালা জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে। নির্দেশনাটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর এবং অন্যান্য আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট পাঠানো হয়েছে।

গাইডলাইন অন ক্লাউড কম্পিউটিং সম্পর্কে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, আর্থিক খাতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষে আর্থিক খাতে ব্যবহৃত সিস্টেমসমূহ পরিচালনায় তথ্য সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে উচ্চগতির ইন্টারনেট ও ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি ব্যবহারের প্রবণতা লক্ষণীয়। চাহিদানুযায়ী সর্বোৎকৃষ্ট প্রযুক্তি ব্যবহার, ব্যয় সাশ্রয়, যেকোনও সময় যেকোনও স্থান হতে সিস্টেমে প্রবেশের সুযোগ, সিস্টেম ব্যবহারে নিরবচ্ছিন্নতা এবং উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে ক্লাউড সেবা গ্রহণের হারও প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে, ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি ইন্টারনেট নির্ভর হওয়ায় এতে সাইবার আক্রমণসহ তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে। সামগ্রিকভাবে আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষে ক্লাউড কম্পিউটিংয়ের ঝুঁকি নিরূপণ ও কার্যকর তদারকি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এমন অবস্থায় ক্লাউড সেবার ক্ষেত্র, ক্লাউড অবকাঠামো, ক্লাউড তথ্য ব্যবস্থাপনা, ক্লাউড প্রযুক্তির বাস্তবায়ন, ক্লাউড সেবা গ্রহণের শর্তাবলীসহ ক্লাউড সেবা প্রদানকারীর সার্বিক ব্যবস্থাপনা, ক্লাউড গভর্নেন্স, ক্লাউড সেবা ব্যবহারের ঝুঁকি নিরূপণ, তথ্যের গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ক্লাউড সংক্রান্ত নিরীক্ষা ও পরিপালন নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোপরি ক্লাউড প্রযুক্তির বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সচেতনতা বৃদ্ধি প্রভৃতি বিষয়কে সমন্বিত করে ক্লাউড কম্পিউটিং সংক্রান্ত নীতিমালা ‘গাইডলাইন্স অন ক্লাউড কম্পিউটিং’ জারি করা হলো।

ক্লাউড কম্পিউটিং সংশ্লিষ্ট যেকোনও কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এ নীতিমালা অনুসরণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো। ‘গাইডলাইন্স অন ক্লাউড কম্পিউটিং’ এ বর্ণিত নির্দেশনার সার্বিক পরিপালন নিশ্চিতসাপেক্ষে ব্যাংক, অ-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার, পেমেন্ট সিস্টেম অপারেটর এবং অন্যান্য আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ক্লাউড কম্পিউটিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করতে পারবে।

বর্তমানে চলমান সকল ক্লাউড সেবা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এ নীতিমালার পরিপালন নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এর ৭এ (ই) অনুচ্ছেদ, ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এর ৪৫ ধারা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইন, ১৯৯৩ এর ১৮(ছ) ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে এ সার্কুলার জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।